বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সম্পর্কে A টু Z
বিজিবি সম্পর্কে সকল তথ্য যদি একসঙ্গে পেতে চান তাহলে আজকের এই আলোচনা পর্বে আপনাকে জানাই স্বাগতম। সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজ আমরা আমাদের এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আপনাদেরকে বিজিবি সম্পর্কে A টু Z জানাবো।
তাহলে আসুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক– বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড অর্থাৎ বিজিবি সম্পর্কে সমস্ত বৃত্তান্ত। সেই সাথে আরো জেনে নেওয়া যাক– বিজিবিতে চাকরি পাওয়ার উপায়, আবেদনের নিয়ম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে।
বিজিবি মানে কি?
বিজিবি মানে হলো– বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষক। মূলত যারা বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত পাহারা দেয় তাদেরকেই বিজিবি বলে সম্বোধন করা হয়, যা বাংলাদেশের একটি আধা সামরিক বাহিনী।
বিজিবির পূর্ণরূপ কি?
বিজিবির পূর্ণরূপ হচ্ছে— বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, যার বাংলা অর্থ বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষক।
বিজিবির সর্বপ্রথম নাম কি?
বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আধাসামরিক বাহিনীর সর্বপ্রথম নাম বিডিআর(BDR), যার পূর্ণরূপ ছিল বাংলাদেশ রাইফেলস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে এই নামকরণটি করা হয়।
কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে ২০১১ সালের দিকে পুনরায় নাম পরিবর্তন করে বিডিআর থেকে বিজিবিতে রূপান্তর করা হয়, যা বর্তমানে বিজিবি/বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নামে পরিচিত।
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কী ? ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ? ফ্রিল্যান্সিং এর A টু Z.
বিজিবির স্লোগান কি?
এটা আমরা সবাই কম বেশি জানি যে, প্রত্যেকটি সেরা রক্ষক বাহিনীর নির্দিষ্ট একটি স্লোগান থেকে থাকে। আর চাকরির বিভিন্ন পরীক্ষায় এ প্রশ্নটি সচরাচর এসেই থাকে যে বিজিবির স্লোগান কি!
আর স্লোগান মূলত সেই বাহিনীর কর্ম প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করেই তৈরি করা হয়। যেহেতু বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী এক বাহিনী তাই এদের স্লোগান মূলত এমন কিছুই হবে যার সাথে রক্ষা বা পাহারার সম্পর্ক থাকবে।
এ বিষয়ে জানা গিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর স্লোগান হলো– ” সীমান্তের অতন্ত্র প্রহরী ” যারা রাতদিন সর্বত্র সর্বদা দেশ রক্ষার্থে স্বতন্ত্র প্রহরী হিসেবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকে।
বিজিবির প্রতীক কি?
বিজিবির প্রতীক চিহ্ন কি সচরাচর অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কেননা এই ধরনের বাহিনীর একটি নির্দিষ্ট প্রতিটি চিহ্ন থেকে থাকে। যা সর্বদা তাদের পরিচয় বহন করে।
প্রতীক একটি বাংলা শব্দ, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় Symbol. আমরা যেমন বাঙালি জাতি, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পরবর্তীতে অর্জন করেছি স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতার পরিচয় বহানোর জন্য তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের পতাকা। যাকে বলা হয় লাল সবুজের পতাকা। মূলত লাল সবুজের পতাকা বাঙালি জাতির প্রতিকি চিহ্ন।
ঠিক একইভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ অর্থাৎ বিজিবির রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট প্রতীকে চিহ্ন। যে চিহ্নে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা এবং ধানের শীসের ছবি, পাশাপাশি আর রয়েছে রাইফেল এবং লেখা রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। আপনি যদি বাংলাদেশের বিজিবিদের প্রতি ক চিহ্ন বুঝতে চান তাহলে নিচের লোগোটি এক নজরে দেখে নিন।
বিজিবি সেক্টর কয়টি ও কি কি?
বিজিবির সেক্টর ১৬টি। সেগুলো হলো
- ১. ঢাকা সেক্টর
- ২. মুন্সিগঞ্জ সেক্টর
- ৩. রাজশাহী সেক্টর
- ৪. দিনাজপুর সেক্টর
- ৫. সিলেট সেক্টর
- ৬. চট্টগ্রাম সেক্টর
- ৭. খুলনা সেক্টর
- ৮. খাগড়াছড়ি সেক্টর
- ৯. চুয়াডাঙ্গা সেক্টর
- ১০. বরিশাল সেক্টর
- ১১. পটুয়াখালী সেক্টর
- ১২. কুমিল্লা সেক্টর
- ১৩. ফেনী সেক্টর
- ১৪. রাঙামাটি সেক্টর
- ১৫. সাতক্ষীরা সেক্টর
- ১৬. বান্দরবান সেক্টর
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর ইউনিট সমূহ
বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের যেমন ১৬ টি সেক্টর রয়েছে ঠিক একইভাবে রয়েছে অনেকগুলো ইউনিট। এমনকি সময়ের সাথে সাথে সীমান্ত সুরক্ষা সংরক্ষণের জন্য নতুনভাবে অসংখ্য ইউনিট তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইউনিটের নাম উল্লেখ করছি। সেগুলো হলোঃ-
১. ব্যাটালিয়ন: বাটালিয়ন হলো বিজিবির প্রাথমিক ইউনিট, যা প্রতিরক্ষা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করে।
২. ফোর্স রিভাইন: এই ইউনিট বাটালিয়নের কাজে সহযোগিতা করে এবং জরুরী সীমান্ত সুরক্ষা মিশনের দায়িত্ব পালন করে।
৩. স্পেশাল ওপারেশনস ব্যুরো (এসওবি): এই ইউনিট বিজিবিদের জন্য বিশেষ মিশন। বিভিন্ন পরিকল্পিত অপারেশন সাকসেসফুল করনে সকল দায়-দায়িত্ব পালন করতে হয় এই ইউনিটে অন্তর্ভুক্ত বিজিবি সৈনিকদের।
৪. নৌবিজাগার ইউনিট: বিজিবি ব্যতীত সমুদ্র এলাকায় নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দায়িত্ব পালন করে এই ইউনিট। যাদেরকে নৌবিজাগার বলে সম্বোধন করা হয়।
৫.নৌ প্যাট্রোল: মূলত সমুদ্র এলাকায় সীমান্ত নিরাপত্তা সংরক্ষণের জন্য নৌ প্যাট্রোল ইউনিট কাজ করে।
এছাড়াও, বিজিবির অন্যান্য স্পেশালাইজড ইউনিট ও প্রশাসনিক ইউনিট সমূহ রয়েছে, যে ইউনিটিগুলো বিভিন্ন কাজে সহায়ক ভূমিকা রাখে এবং এই প্রত্যেকটি ইউনিটগুলো বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা ও সীমান্ত সুরক্ষা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে হ্যাঁ আপনি যদি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ অর্থাৎ বিজিবি প্রতিরক্ষা বাহিনীর ইউনিট সমূহ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম অনুসরণ করুন। কেননা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটগুলোতে এই সকল ইনফরমেশন খুবই সুন্দর ও সাবলীলভাবে নিয়মিত আপডেট করা হয়।
এবার আসুন বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার কয়টি, বিজিবি ব্যাটালিয়ন কয়টি এবং বিজিবির বিভিন্ন পদ সমূহের নাম জেনে নেওয়া যাক।
বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার কয়টি ও কি কি?
বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এর ট্রেনিং সেন্টার মূলত অসংখ্য, যেগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত। বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার গুলো সাধারণত যে সকল জায়গায় অবস্থিত সেই জায়গা গুলোর নাম হলো – রাজশাহী, সিলেট, সাতক্ষিরা, চট্টগ্রাম, নড়াইল, বাগেরহাট, পান্থপথ, তেকনাফ, বরিশাল, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, বগুড়া, ফেনী, পাটুয়াখালী,
চাপাইনবাবগঞ্জ, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, যশোর, নগরকাণ্ডি, গাজীপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, পিরোজপুর, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, কর্ণফুলি, মাগুরা, নাটোর, জয়পুরহাট, রংপুর, সুনামগঞ্জ, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, খুলনা, বরগুনা, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, বকশীগঞ্জ, বরিশাল, স্যাটক্রাইম, কক্সবাজার, স্যাটগোয়ান, স্যাটগোয়ান সাদর, মহেশখালী, চাঁদপুর, নেত্রকোনা, সরাইল্লা, গাইবান্ধা, জামালপুর সহ-প্রভৃতি।
তবে আপনি যদি প্রত্যেকটি ট্রেনিং সেন্টারের নাম এবং ঠিকানা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে ভিজিট করুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ওয়েবসাইটের (ক্লিক করুন) সাজেস্টকৃত এই পেজে। কেননা বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার সম্পর্কে সমস্ত বৃত্তান্ত তুলে ধরা হয়েছে এখানে।
বিজিবি ব্যাটালিয়ন কয়টি
খুব সম্ভবত বিজিবি ব্যাটালিয়ন সংখ্যা চারটি। কেননা সর্বশেষ আপডেট থেকে জানা গিয়েছে বাংলাদেশের প্রায় 4500 কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকাকে রংপুর, যশোর, চট্টগ্রাম এবং সরাইল এই চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। তবে হ্যাঁ, আপনি যদি বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর ব্যাটালিয়ন সংখ্যা কত সেটা জানতে চান তাহলে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ।
বিজিবি পদ সমূহ
আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা বিজিবি তে যোগদানকৃত পদ সমূহের নাম সম্পর্কে জানব। সচরাচর যে সকল নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় সেগুলোতে বিভিন্ন পদের নাম উল্লেখ থাকে। তাই আপনি বিজিবির কি কি পদে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতে পারেন সেটার জন্য হলেও জেনে রাখা প্রয়োজন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড অর্থাৎ বিজিবির পদ সমূহ সম্পর্কে। অতএব নিচের লিস্টটি একবারের জন্য হলেও পড়ে ফেলুন। কেননা এ পর্যায়ে আমরা বিজেপি পদসমূহ ও তার নাম উল্লেখ করছি। যথা —
- সহকারি পরিচালক
- উপসহকারী পরিচালক
- অতিরিক্ত পরিচালক
- পরিচালক
- উপ মহা পরিচালক
- অতিরিক্ত মহাপরিচালক
- মহাপরিচালক বা বিজিবির প্রধান
মূলত যে পদ টি আর্মি বাস সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদবীর সমমান তাদেরকে বলা হয় সহকারী পরিচালক অর্থাৎ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। অন্যদিকে যারা আর্মি বাস সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদবীর সম্মান তাদেরকে বলা হয় উপ-পরিচালক, ইংরেজিতে ডেপুটি ডিরেক্টর।
যারা আর্মি বাস সেনাবাহিনীর মেজর পদবের সম্মান তাদেরকে বিজিবিতে বলা হয় অতিরিক্ত পরিচালক এবং ইংরেজিতে বলা হয় অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর। সেই সাথে যে বা যারা আর্মিবাস সেনাবাহিনীর লে কর্নেল পদবীর সমমান তাদেরকে বলা হয় পরিচালক অর্থাৎ ডিরেক্টর। অন্যদিকে যারা আর্মিবাস সেনাবাহিনীর কর্নেল পদবীর সম্মান তাদেরকে বলা হয় উপ-মহা পরিচালক। ইংরেজিতে ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল।
সেই সাথে, যারা আর্মি বা সেনাবাহিনীর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পদবীর সমমান তাদেরকে বিজিবিতে বলা হয় অতিরিক্ত মহাপরিচালক অর্থাৎ অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল এবং যারা মেজর জেনারেল পদবীর সম্মান তাদেরকে বিজিবিতে বলা হয় মহাপরিচালক অর্থাৎ বিজিবি প্রধান। ইংরেজিতে বলতে পারেন ডিরেক্টর জেনারেল।
তবে হ্যাঁ, এর বাইরেও বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এ আরো বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। যেমন—
- অফিস সহকারি
- অফিস সহায়ক
- পরিছন্নতা কর্মী
- বাবুর্চি
- মেস ওয়েটার
- ফাউল কিপার
- মালি
- টেইলর
- কার্পেন্টার
- সহকারি এবিএম ড্রাইভার
- পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায় (পরিক্ষিত টিপস)
বিজিবি পদ ও বেতন/বিজিবি বেতন স্কেল
মূলত পদের ওপর নির্ভর করে বিজিবিদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার তারতম্যতা থেকে থাকে। কেননা এ পর্যন্ত অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে বিজিবির জন্য ২০টি গ্রেড রাখা হয়েছে।
- গ্রেড-এক-এ বেতন রাখা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা,
- গ্রেড-দুই ৪৩ হাজার টাকা,
- গ্রেড-তিন ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা,
- গ্রেড-চার ২৯ হাজার টাকা,
- গ্রেড-পাঁচ ২২ হাজার টাকা,
- গ্রেড-ছয় ১৬ হাজার টাকা,
- গ্রেড-সাত ১৫ হাজার টাকা,
- গ্রেড-আট ১৪ হাজার ৫০০ টাকা,
- গ্রেড-নয় ১৩ হাজার ৫০০ টাকা,
- গ্রেড-দশ ১২ হাজার ৭০০ টাকা,
- গ্রেড-এগার ১২ হাজার ৫০০ টাকা,
- গ্রেড-বারো ১১ হাজার ৩০০ টাকা,
- গ্রেড-তের ১১ হাজার টাকা,
- গ্রেড-চৌদ্দ ১০ হাজার ২০০ টাকা,
- গ্রেড-পনেরো ৯ হাজার ৭০০ টাকা,
- গ্রেড-ষোল ৯ হাজার ৩০০ টাকা,
- গ্রেড-সতেরো ৯ হাজার টাকা,
- গ্রেড-আঠারো ৮ হাজার ৮০০ টাকা,
- গ্রেড-উনিশ ৮ হাজার ৫০০ এবং
- গ্রেড-বিশ ৮ হাজার ২৫০ টাকা।
পাশাপাশি আরো রয়েছে মাসিক মূল বেতনের সাথে বিভিন্ন ধরনের ভাতার সুবিধা। যেমন:
সহকারি পরিচালক
মূল বেতন হিসেবে পাবেন ১২৪৯৭ টাকা। এর সাথে প্রতিমাসে আরো পাবেন–
- কিট ভাতা-৪৫৯ টাকা
- বিশেষ ভাতা ২৭৪ টাকা,
- ব্যাটম্যান ভাতা ৫৪৫ টাকা
ঠিক একইভাবে পদবীর উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ভাতা প্রদান করা হবে। তবে হ্যাঁ পুলিশের পে স্কেল সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮২৫০ টাকা। এছাড়াও রয়েছে পদোন্নতির সুযোগ। যদি পদোন্নতি হয়ে যায় তাহলে বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ও ভাতার পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হবে সেটা তো বুঝতেই পারছেন। এবার আসুন বিজিবিতে চাকরি পাওয়ার উপায় এবং বিজিবি সম্পর্কিত আরো কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর অতি সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
বিজিবিতে চাকরি পাওয়ার উপায়
আপনি যদি বিজিবিতে চাকরি করতে চান তাহলে প্রথমত আপনাকে বিজিবিতে শূন্য পদে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। পরবর্তীতে আপনি কোন পদে আবেদন করতে চান সেটা নির্বাচন করতে হবে এবং নতুন প্রকাশিত বিজেপি চাকরির সার্কুলারের আবেদন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য ইনস্ট্রাকশন মেনে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদনকার্য সম্পন্ন করতে হবে।
আপনি যদি আবেদনে গ্র্যান্ডডেড হয়ে যান তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে জয়েন হতে হবে বিজিবিতে। তাই লিখিত পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে সেই সাথে মৌখিক অর্থাৎ ভাইভা পরীক্ষাতেও টিকে যাওয়ার জন্য নিতে হবে ভালো মানের প্রস্তুতি।
এখন কথা হচ্ছে, আপনি যদি বিজিবিতে চাকরি করতে চান তাহলে আপনার কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন হবে? সে সম্পর্কে ধারণার জন্য নিচের বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বিজিবিতে আবেদনের যোগ্যতা
বিজিবিতে মূলত এক একটি পদের জন্য একেক রকমের যোগ্যতার কথা উল্লেখ থাকে। আপনি মূলত নতুন প্রকাশিত বিজিবি সার্কুলার ২০২৩ অনুসরণ করতে পারেন আবেদনের যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য।
তবে আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা সিপাহী পদে আবেদন করতে হলে একজন নারী এবং একজন পুরুষের কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন সেগুলো ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে নারী-পুরুষ উভয় প্রার্থীদেরই এসএসসি বা সম্মানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ-৩ এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ-২.৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
পাশাপাশি উভয় প্রার্থীদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে। পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা লাগবে পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি, মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি। আর পুরুষ প্রার্থীদের ওজন হতে হবে ৪৯ দশমিক ৮৯৫ কেজি। বুকের মাপ হতে হবে ৩২ থেকে ৩৪ ইঞ্চি।
অন্যদিকে মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ওজন ৪৭ দশমিক ১৭৩ কেজি এবং বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ২৮ ইঞ্চি ও স্ফীত অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি থাকতে হবে। উভয় প্রার্থীদের দৃষ্টিশক্তি লাগবে ৬/৬। তবে উপজাতীয়দের ক্ষেত্রে উচ্চতা, ওজন, বুকের মাপের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা আছে। আর হ্যাঁ অন্যান্য যোগ্যতার মধ্যে উভয় প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত ও সাঁতার জানতে হবে।
বিজিবিতে আবেদনের নিয়ম
বিজিবিতে সাধারণত আবেদনের জন্য অনলাইন মাধ্যম এর নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তাই এজন্য আপনাকে সম্প্রতি প্রকাশিত বিজিবি চাকরির সার্কুলার থেকে সংগ্রহ করতে হবে আবেদনের লিংক। পরবর্তীতে উক্ত লিঙ্গে সরাসরি ভিজিট করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পূরণ করে আবেদন পত্র সাবমিট করতে হবে। আপনি যদি অনলাইনে আবেদন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কিত আরো একটি আর্টিকেল পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।
বিজিবি সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
১. বিজিবি প্রধানের নাম কি?
উত্তর- বিজিবির প্রধানের নাম মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।
২. বিডিআর এর বেতন কত?
উত্তর – বি ডি আর অর্থাৎ বিজিবির সৈনিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার টাকা।
৩. বিজিবির নতুন ডিজি কে নিয়োগ পান?
উত্তর – বিজিবির নতুন ডিজি হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন মেজর জেনারেল শাফিনুল ইসলাম।
৪. বিজিবি মোবাইল নাম্বার
উত্তর- আপনি যদি বিজিবি মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করতে চান তাহলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে কর্মকর্তা দের লিস্ট থেকে যেকোনো একটি নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করতে পারবেন। তবে আমরা আপনাদের সুবিধার্থে এ পর্যায়ে মহাপরিচালকের ফোন নাম্বার উল্লেখ করছি। যথা– ০২৯৬৫০১০০।
৫. বিজিবি চাকরির মেয়াদ কত বছর?
উত্তর- বিজিবি চাকরির মেয়াদ ৩৭ থেকে ৫৭ বছর.
৬. বিজিবির সুযোগ সুবিধা
উত্তর– বিজিবি র সুযোগ সুবিধা হচ্ছে– বিভিন্ন বেতন ভাতা গ্রহণের সুযোগ, যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সীমান্ত ভাতা বৃদ্ধির সুযোগ অগ্রিম বেতন সহ বাৎসরিক দুই মাসের ছুটি গ্রহণের সুযোগ এবং পারিবারিক রেশন ও তিন বছরের নিচে সন্তানদের পূর্ণ স্কেল রেশন, পাশাপাশি প্রতিবন্ধী সন্তানদের জন্য নানা প্রকারের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার সুব্যবস্থা।
৭. বিজিবি আধা সেনাবাহিনী সংগঠন কত সালে গঠিত হয়?
উত্তর-১৯৭৫.
৮. বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কোথায়?
উত্তর- বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাইতুল ইজ্জতে অবস্থিত।
৯. বিজিবি কি সরকারি চাকরি?
উত্তর– হ্যাঁ বিজিবি সরকারি চাকরি।
১০. বিজিবি এর কাজ কি?
উত্তর– বিজিবির কাজ হলো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বাংলাদেশ নামক এই ছোট্ট দেশটিকে সীমান্ত রক্ষী হিসেবে পাহারা দেওয়া।
১১. সুকানি এর কাজ কি?
উত্তর– সুকানি এর কাজ হচ্ছে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জাহাজ পরিচালনা। মূলত সুকানি শব্দের অর্থ জাহাজের চালক বা কর্ণধার।
১২. বিজিবিতে জাহাজ চালক কে কি বলা হয়?
উত্তর– সুকানি
১৩. বিজিবিতে জাহাজে মাস্টার কোন পদে থাকে?
উত্তর– বিজিবিতে জাহাজে মাস্টার জাহাজের ক্যাপ্টেন পদে নিযুক্ত থাকেন।
১৪. বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়োগ 2023 সার্কুলার কবে দিবে?
উত্তর- সার্কুলার প্রকাশের সুনির্দিষ্ট কোন তারিখ নেই। তবে সবার প্রথমে সার্কুলারের নোটিশ পেতে নিয়মিত তাদের অফিসের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
১৫. বিজিবির শাখা কি?
উত্তর– বিজিবি শাখা হচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
১৬. বিজিবির ধরন কি?
উত্তর– বিজিবির ধরন আধা সামরিক।
১৭. বিজিবি এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তর– বিজিবি এর পূর্ণরূপ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ।
১৮. স্বাধীনতার পূর্বে বিজিবির কি নাম ছিল?
উত্তর- স্বাধীনতার পূর্বে বিজিবির নাম ছিল ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস সংক্ষেপে ইপিআর।
১৯. বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ডাক নাম কি?
উত্তর – বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর ডাকনাম বিজিবি।
২০. বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নীতিবাক্য কি?
উত্তর– বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর নীতিবাক্য সীমান্তের অতন্ত্র প্রহরী।
২১. বিজিবির মহাপরিচালক কে?
উত্তর– বিজিবি র মহাপরিচালক হলেন মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান এনডিপি, পিএসসি।
২২. বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক কে?
উত্তর– বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বেনাজীর আহমেদ, বিজিবিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
২৩. বিজিবির পতাকা
উত্তর– বিজিবির পতাকা হল-
২৪. বিজিবির প্রতীক চিহ্ন
উত্তর– বিজিবির প্রতীক চিহ্ন হচ্ছে-
২৫. বিজিবির সদর দপ্তর কোথায়?
উত্তর- বিজিবির সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায়।
২৬. বিজিবির সক্রিয়কাল সময়
উত্তর– বিজিবির সক্রিয়কাল সময় জানতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর অফিসার ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং অনুসন্ধান করুন।
২৭. মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী নাম কি?
উত্তর- মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীর নাম হচ্ছে মিয়ানমার পুলিশ বাহিনী যার সংক্ষিপ্ত নাম বিজিপি এবং এই বাহিনীর প্রধান হলেন ব্রি জেন মাইন্ট টো।
২৮. বিজিবি তে কত সালে প্রথম নারী সৈনিক যুক্ত হন?
উত্তর- ২০১৬ সালে
২৯. বিজিবির প্রথম নারী সৈনিক কে?
উত্তর– বিজিবির প্রথম নারী সৈনিক হলেন জাহানারা আক্তার।
৩০. বিজিবি র পোশাক এর রং কি?
উত্তর- মেরুন, মোচা, গাঢ় সবুজ, কালো
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বিজিবি সম্পর্কে সকল তথ্য সম্পর্কিত আলোচনার আজ এখানে ইতি টানছি। আশা করি আমাদের আজকের এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আপনি সকল প্রকার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। তবুও যদি আরো কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিন। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।