পুলিশের এসআই

পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ, নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে!

এসআই হলো বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার পদের সেকেন্ড ক্লাস গেজেটেড অফিসার। এস আই এর পূর্ণরূপ হচ্ছে সাব-ইন্সপেক্টর। যাদেরকে বলা হয় পুলিশ বাহিনীর মেরুদন্ড। কেননা, তারা ইনভেস্টিগেশন অফিসার হিসেবে প্রায় সকল মামলা তদন্ত করা সহ মাঠ পর্যায়ে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে থাকে।

অনেকেই চায় পুলিশের এসআই পদে চাকরি করতে। তাই আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ এবং নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু কার্যকরী উপায় সাজেস্ট করব।

আরও দেখুনঃ বিসিএস ক্যাডার হতে হলে কি করতে হবে

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা—  আপনারা যারা নতুন নিয়মে এসআই সার্জেন্ট নিয়োগের প্রস্তুতি নিবেন, তারা আজকের এই প্রবন্ধটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা আমরা ধারাবাহিকভাবে এসআই পদে পরীক্ষার সর্বশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরব, যা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি কাজে আসবে বলে আশা করা যায়।

পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ

পুলিশের এসআই পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩ সংরক্ষণ করতে চাইলে আপনি বাংলাদেশী বিভিন্ন ওয়েবসাইট অনুসরণ করতে পারেন অথবা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে তা অনুসন্ধান করতে পারেন।

কেননা যে কোন পদে আবেদনের জন্য আগে আবেদন নোটিস অর্থাৎ চাকরির সার্কুলার সংগ্রহ করা অধিক বেশি জরুরী। কেননা একটি চাকরির সার্কুলারে মূলত এ টু জেড উল্লেখ করা থাকে। যেমন ধরুন:

  • উক্ত চাকরিটি পেতে হলে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি হতে হবে?
  • চাকরির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি আপনার কোন কোন বিষয়ে দক্ষ?
  • কত বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে আপনার, নাকি উক্ত চাকরিতে আপনি অভিজ্ঞতা ছাড়াই শুধুমাত্র নিজের যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করতে পারবেন।
  • চাকরিতে আবেদনের জন্য আপনি ডাকযোগে আবেদন পত্র পাঠাবেন নাকি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনকার্য সম্পন্ন করতে পারবেন!
  • উক্ত পদে আবেদনের জন্য কত টাকা ফ্রি প্রদান করতে হবে?
  • উক্ত বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ সমূহে আবেদনের পর আপনি কতদিন পরীক্ষার জন্য সময় পাবেন সুতরাং কত তারিখে পরীক্ষা সংঘটিত হতে পারে সেই তারিখ উল্লেখ থাকবে।
  • পাশাপাশি ভাইভা পরীক্ষা কোথায় অনুষ্ঠিত হবে এবং কত তারিখে অনুষ্ঠিত হবে?
  • কি কি ভুল থাকলে আপনার বিজ্ঞপ্তি বাতিল হয়ে যাবে!
  • চাকরির সার্কুলার এ উল্লেখিত পদে আবেদনের জন্য আপনার বয়স কত হতে হবে?
  • কোন কোটা থেকে থাকলে আপনি কেমন সুযোগ-সুবিধা পাবেন?
  • শারীরিক কোন প্রতিবন্ধকতা থাকলে উক্ত চাকরির সার্কুলার আবেদন করতে পারবেন কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। 

আর তাই নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আপনাকে সম্প্রতি প্রকাশিত এস আই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি 2023 অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। কেননা উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে এ টু জেড উল্লেখ করা রয়েছে। তবে এ পর্যায়ে আমরা নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব যেগুলো সম্পর্কে জানাটা অতীব জরুরী।

আরও পড়ুনঃ জুনিয়র অডিটর বা অডিটর এর কাজ ও যোগ্যতা সম্পর্কে

নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নিবেন কিভাবে?

আপনি যদি নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নিতে চান তাহলে আপনাকে এটা জানতে হবে যে একজন এসআইকে নির্বাচনের জন্য মূলত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কি কি বিষয়ে উল্লেখ রাখেন এবং কয়টি ধাপ পার করেন একজন প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। কেননা প্রতিবছরই বাংলাদেশ পুলিশ এ উপ-পরিদর্শক হিসেবে বিশাল সংখ্যক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়।

আর এর জন্য একটি বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ পুলিশ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। যে সার্কুলার থেকে নারী-পুরুষ উভয়েই বাংলাদেশে স্থায়ী নাগরিকরা অনলাইন অথবা অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন কার্য সম্পন্ন করতে পারেন। মূলত এই সার্কুলার প্রকাশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী করে পুলিশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন নিয়মে এস আই নিয়োগ পরীক্ষার আধুনিকায়ন করা।

তাহলে আসুন জেনে নেই বাংলাদেশ পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর অর্থাৎ এস আই প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কয়টি ধাপ পেরুতে হয় এবং সেগুলো কি কি!

এসআই পদে প্রার্থী নির্বাচনের ধাপ গুলো কি কি?

মূলত এসআই প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আটটি ধাপ সম্পন্ন করা হয়। যথা:-

  • প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং,
  • শারীরিক মাপ ও সহনশীলতা পরীক্ষা
  • লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা
  • কম্পিউটার-দক্ষতা পরীক্ষা
  • বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষা
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষা
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন
  • মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন

সুতরাং আপনি যদি এইসব কয়েকটি পর্যায়ে টিকে যেতে পারেন তাহলে সবশেষে একজন এসআই হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে নিযুক্ত হতে পারবেন। 

আরও দেখুনঃ একসাথে একাধিক চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার টিপস

প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং

প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে আবেদনকারী সকল প্রার্থীদের মধ্যে থেকে মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক/ডিগ্রি/স্নাতক/সমমান পরীক্ষার ফলাফল এবং তার উচ্চতার উপর ভিত্তি করে এসআই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়ে থাকে। আর এই প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং এর সময় মূলত যাচাই করা হয়:-

  • শারীরিক মাপ
  • শারীরিক সক্ষমতা এবং
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসমূহ

শারীরিক মাপ এবং সহনশীলতা পরীক্ষা

দ্বিতীয় ধাপে মূলত আবেদনকারী প্রার্থীর শারীরিক মাপ এবং সহনশীলতা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। আপনি যখন প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং এ সিলেক্টেড হয়ে যাবেন তখন বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য সময় সীমা ও জায়গায় উপস্থিত হতে হবে। কেননা সেখানে শারীরিক মাপ এবং সহনশীলতা পরীক্ষার জন্য আপনাকে সাতটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। সেই ইভেন্ট গুলো হচ্ছে:-

  • লং জাম্প
  • হাই জাম্প
  • দৌড়
  • পুষ আপ
  • সিট আপ
  • ড্র্যাগিং এবং
  • রোপ ক্লাইমিং

আর তাই এগুলো আপনাকে বাড়িতেই প্র্যাকটিস করতে হবে এবং শারীরিক মাপ ও সহনশীলতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।

আর হ্যাঁ, শারীরিক মাপ অর্থাৎ শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষার জন্য মূলত আপনাকে তিনটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। কেননা বাংলাদেশ এস আই পদের ক্ষেত্রে শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষা করার জন্য তিনটা দিন ধার্য করা হয়। এবং তিনটা দিনে তিন রকম পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। 

প্রথম দিনে যা যা করা হয়:-

  • প্রথমত প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট সহ পার্থীদেরকে বাছাই করা হয় এরপর তাদেরকে পাঠানো হয় উচ্চতা মাপার নির্দিষ্ট স্থানে। 
  • বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ওজন উচ্চতা এবং বুকের মাপ পরিমাপ করার পরবর্তীতে প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়
  • সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রার্থীদের যোগ্য হিসেবে পরবর্তীতে ঘোষণা দেওয়া হয়
  • এরপর প্রার্থীদের এডমিট কার্ডের এক কপি শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য দেওয়া হয় এবং
  • পার্থীদের ফিজিক্যাল ইনজুরিস টেস্ট এর সময়সীমা জানিয়ে দেওয়া হয়। 

দ্বিতীয় দিনে যা যা করা হয়

  • পার্থি যদি শারীরিক সক্ষমতার দিক থেকে টিকে যায় তাহলে দ্বিতীয় দিনে প্রথমত দৌড় পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ সময় পুরুষ প্রার্থীদের জন্য ১৬০০ মিটার দূরত্ব দৌড়ানোর জন্য সময় দেওয়া হয়  ৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ড । অপরদিকে নারী প্রার্থীদের জন্য ১০০০ মিটার দৌড়ানোর জন্য সময় দেওয়া হয় ৭ মিনিট। আর যারা যারা এই সময়ের মধ্যে তাদের নির্ধারিত দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে তারা যজ্ঞ বলে বিবেচিত হয়। 
  • দ্বিতীয়তঃ পরীক্ষা নেওয়া হয় লং জাম্প এর। যে আপনি কতটুকু দীর্ঘ লাভ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীদের জন্য কমপক্ষে ১০ ফুট এবং নারী-প্রার্থীদের জন্য কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব জাম্প করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। আর আপনি যদি তাদের নির্ধারিত দূরত্ব অতিক্রম করেন বা সে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন তাহলে এই ধাপেও সেলেক্টেড হয়ে যাবেন। এসবের ক্ষেত্রে মূলত সর্বোচ্চ তিনবার সুযোগ পাবেন আপনি। তিনবারের মধ্যে আপনি যদি তাদের নির্ধারিত দূরত্ব ছুঁতে পারেন তাহলে সিলেক্টেড। 
  • তৃতীয়ত: হাই জাম্প। এ সময় পুরুষ প্রার্থীদের কমপক্ষে ৩.৫ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় এবং নারী প্রার্থীদের দুই দশমিক পাসপোর্ট উচ্চতা অতিক্রম করতে হয়। এ পর্যায়ে মূলত তিনবার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে এক একজন প্রার্থীদের কে। 

তৃতীয় দিন যা যা করা হয়

আপনার যদি প্রথম ও দ্বিতীয় দিন সবকিছুতে উত্তীর্ণ হন তাহলে তৃতীয় দিনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সেটা প্রার্থীদের কে জানিয়ে দেওয়া হয়। 

আরও পড়ুনঃ সাম্প্রতিক চাকরির বাজার এবং এর বাস্তবতা।

লিখিত ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা

এসআই প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি আপনি শারীরিক সক্ষমতায় টিকে যান পরবর্তীতে লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। আর এই সময় প্রার্থীদের তিনটি বিষয়ে আড়াইশো নম্বরের উপর লিখিত ও মনস্তিত পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। 

মূলত এ পর্যায়ে ইংরেজি, বাংলা রচনা ও প্যারাগ্রাফ কম্পোজিশন বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়। অপরদিকে সাধারণ জ্ঞান ও গণিত বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং মনস্তত্ত্ব বিষয়ে মাত্র ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। আর আপনি যদি সঠিকভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করেন তাহলে এই ধাপটিও পেরিয়ে যেতে পারবেন। 

কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষা

বর্তমান যুগ প্রযুক্তি নির্ভর। আর এখন প্রযুক্তির ছোঁয়া সকল ক্ষেত্রে। এটা আমরা সবাই জানি এবং মানতে বাধ্য যে প্রযুক্তির সর্বত্র ব্যবহার জীবনযাত্রার মানকে অনেক বেশি সহজ এবং উন্নত করে তুলেছে। আর এখন যেকোনো চাকরির ক্ষেত্রে কম্পিউটার দক্ষতার দিকে নজর দেওয়া হয় এবং তাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। 

আর আপনি যদি এসআই পদে নিযুক্ত হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার কম্পিউটারে দক্ষ হতে হবে। কেননা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আরো দক্ষ করে তুলতে এই পদ্ধতি প্রবর্তন। 

তাই আপনি যদি কম্পিউটার দক্ষতা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়গুলো তাদের প্রশ্ন পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতে পারেন তাহলে চাকরি পাওয়াটা আপনার জন্য অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে। কেননা কম্পিউটার দক্ষতা সম্পন্ন প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করে খুঁজে বের করা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

 বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষা

আপনি যখন কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন তখন আপনার 50 নম্বরের বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে। আর সবশেষে লিখিত মনস্তত্ত্ব ও বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর একসঙ্গে যোগ করার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আপনার পরবর্তী ধাপে পাঠানোর জন্য সিলেক্টেড  করা হবে কিনা। 

স্বাস্থ্য পরীক্ষা

মূলত বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর যেকোনো পদে মানুষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরবর্তীতে ফিরে আসেন। কেননা এই চাকরির ক্ষেত্রে শারীরিক সকল কিছু যাচাই-বাছাই করা হয় এবং অল্পসংখ্যক ত্রুটিও এই চাকরি পাওয়ার পথে বাঁধা হতে পারে। 

আর তাই আপনি পূর্ববর্তী ধাপ পেরিয়ে আসতে পারলে আপনাকে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ঢাকায় নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশনা প্রদান করা হবে এবং আপনি যদি তাতে উত্তীর্ণ হন পরবর্তীতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ফরম দাখিল করা হবে। 

এরপর হবে মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন। সুতরাং এ পর্যায়ে আপনাকে সাব ইন্সপেক্টর অফ পুলিশ অফিসার হিসেবে নির্বাচন করা হবে এবং আপনাকে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হবে প্রশিক্ষণের জন্য।

আরও পড়ুনঃ চাকরি সন্ধান কর্মপরিকল্পনার ৬টি ধাপ (ক্যারিয়ার ব্যবস্থাপনা)

এসআই নিয়োগ লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার টিপস

যেহেতু ইংরেজি বাংলা রচনা এবং কম্পোজিশনের উপর ভিত্তি করে ১০০ নম্বরের প্রশ্ন এসে থাকে তাই আপনাকে এই সকল বিষয় সমূহ ভালোভাবে পড়তে হবে এবং আয়ত্ত করতে হবে। এ সময় আপনি ইংরেজি বিষয়ের জন্য মূলত রচনা, বাক্য তৈরি, শূন্যস্থান পূরণ লেটার লেখা বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ ইত্যাদি বেশি বেশি পড়বেন। 

আর রচনা ও কম্পোজিশন হিসেবে পড়বেন রোহিঙ্গা, শরণার্থী, স্বাস্থ্য অধিকার, মেট্রোরেল প্রকল্প, শ্রম অধিকার, লিঙ্গ বৈষম্য, এস ডি জি চ্যালেঞ্জ সহ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ রচনা সম্ভার। 

আর হ্যাঁ অনুবাদ অংশে ভালো করার জন্য ইংরেজি পত্রিকা পড়ার চেষ্টা করবেন। সেই সাথে নিজেকে একটু ইউনিক এবং এডভান্স করার প্রচেষ্টা করা অধিক বেশি জরুরী। আপনি সবকিছু করবেন বেসিক ধারণা অর্জন করবেন এবং নিজের মত করে পরীক্ষায় দেখবেন আশা করা যায় আপনার সুন্দর ও সাবলীল শব্দ চয়ন আপনাকে আশানুরূপ ফলাফল এনে দিবে। 

অপরদিকে সাধারণ জ্ঞান ও গণিতের ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো বই পড়তে পারেন। তবে সাধারণ গণিতের জন্য আমরা সাজেস্ট করব সিক্স থেকে টেন পর্যন্ত যে গণিত রয়েছে সেগুলো সম্পন্ন করার। আশা করা যায় আপনি তার মধ্যে এই কমন পেয়ে যাবেন। আর সাধারণ জ্ঞান সংক্রান্ত বিষয় থেকে কমন পাওয়ার জন্য যে সকল বিষয়বস্তু বেশি মনোযোগের সাথে পড়বেন সেগুলো হলো:

  • জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা
  • আন্তর্জাতিক ও বিশ্ব ব্যাংক
  • আঞ্চলিক ও বিশ্ব রাজনীতি
  • বিশ্ব অর্থনীতি
  • অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সংস্থা
  • সাধারণ বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়বস্তু
  • কম্পিউটার সংক্রান্ত বিষয়বলি
  • বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব সহ বিগত সালের প্রশ্নপত্র।

আরও দেখুনঃ  সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সবার আগে পাওয়ার সকল উপায়

অপরদিকে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে ৫০ নম্বরের মধ্যে যদি আশানুরূপ মার্ক পেতে চান তাহলে বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ ও শব্দ লেখা ভালোভাবে অনুসরণ করবেন। সেই সাথে ছোট ছোট গাণিতিক সমস্যা যাতে খুব সহজেই সল্ভ করতে পারেন সেই প্রস্তুতি নেবেন সহসহ টেকনিক অবলম্বনের মাধ্যমে। 

মূলত চাকরি পরীক্ষার প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য সময় ভাগ করে পড়তে হবে আপনাকে। আর এ সম্পর্কে যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এখনই পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের পাবলিশকৃত আরেকটা আর্টিকেল। সেটা হলো:- চাকরির পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

এস আই পদে চাকরি করার সুবিধা

পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ, নতুন নিয়মে এসআই নিয়োগ প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে ইত্যাদি সম্পর্কে ইতোমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি। তবে এস আই পদে চাকরি করলে কি কি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় এ সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে তাই আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা এস আই পদে চাকরি পাওয়ার পর কি কি সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন আপনি সেগুলো উল্লেখ করবো। যথা:

  • শুরুতে ৩০ হাজার টাকা বেতন সহ রেশন, মামলা তদন্ত ভাতা, ইউনিফর্ম এবং বিশেষ ইউনিট থেকে অতিরিক্ত ভাতা গ্রহণের সুযোগ পাবেন
  • মিশন বা প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে বিনা খরচে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সুযোগ ভোগ করতে পারবেন
  • যদি যোগ্যতা সম্পন্ন হন তাহলে প্রতি এক বছরের মিশনে 50 লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন
  • যোগ্যতা থাকলে পদোন্নতির সুযোগ ভোগ করতে পারবেন
  • পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তার সুযোগ পাবেন
  • সাধারণ মানুষ থেকে মন্ত্রী-এমপি পর্যন্ত যোগাযোগ ও প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় পর্যন্ত বিচরণ করার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। 

তবে হ্যাঁ, এসআই হিসেবে চাকরি করার ফলে আপনি যেমন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন ঠিক একইভাবে বেশ কিছু অসুবিধাও গ্রহণ করতে হবে আপনাকে। যেমন ধরুন:

  • আপনি যদি বিচক্ষণ না হয়ে থাকেন তাহলে টিকতে পারবেন না
  • কখনো কখনো আপনি সৎ থাকা সত্ত্বেও কতিপয় লোকের মাধ্যমে সমালোচনার শিকার হবেন
  • মাঝে মাঝে চরম বিরূপ পরিবেশে কাজ করতে হবে আপনাকে যেটা একেবারেই কঠিন

তবে ভালো কিছু করতে হলে অবশ্যই কষ্ট করতে হবে এটাই স্বাভাবিক। আর প্রত্যেকটি জিনিসের ভালো এবং মন্দ সুবিধা-অসুবিধা দুই- ই থেকে থাকে। তাই এমন কিছু চিন্তা করলে আমাদের দ্বারা কখনোই কোন কাজ করা সম্ভব নয়। 

অতএব আপনি পুলিশের এস আই নিয়োগ সার্কুলারে যোগদান করার সুযোগ পাবেন যদি আপনি উপযুক্ত অযোগ্য হয়ে থাকেন এবং আপনার দৃঢ় মনোবল থেকে থাকে। তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *