বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য (স্যাম্পল ও ছবিসহ)
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক পাঠক বন্ধুদের জানাই স্বাগতম। কেননা আজ আমরা– বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য স্যাম্পল ও ছবিসহ তুলে ধরব আপনাদের সুবিধার্থে। স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে স্বাভাবিকভাবেই আমাদেরকে বিদায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে হয়। আর তাই বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে অনেকেরই।
কিন্তু একটা অনুষ্ঠানে কিভাবে আপনি আপনার বক্তব্য পেশ করবেন, বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য হিসেবে মূলত আপনার কোন কোন বিষয়গুলো তুলে ধরা উচিত, তাছাড়া সহকর্মীর বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য কেমনই বা হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরী
কারণ আপনি যদি বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য সম্পর্কে ধারণা না রাখেন তাহলে বিদায়ী স্মৃতিচারণে বিদায়ী ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে যুক্তি সঙ্গত বক্তব্য রাখতে পারবেন না। তাহলে আসুন আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক– বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী।
জেনে নিনঃ প্রাথমিক শিক্ষক বদলির অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য হিসেবে আমরা সম্পূর্ণ একটি প্যারাগ্রাফ তুলে ধরব। তবে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য হিসেবে আপনি যে নমুনা চিত্রটি পেতে চান তারা এই পেজটি স্কল করুন। কেননা আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরবো।
আপনি মূলত বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম আয়ত্ত করতে পারলে ইউনিক ভাবে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য নিজে নিজেই লিখতে সক্ষম হবেন এমনকি কোন কিছুর সাহায্য না নিয়ে অনুষ্ঠানে সকলের সামনে সাবলীল ভাষায় বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
তাই আসুন আলোচনার এ পর্যায়ে– একটি বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার জন্য বা একটি বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য খাতায় লেখার ক্ষেত্রে মূলত কোন কোন নিয়ম মেইনটেইন করে চলা উচিত সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পাশাপাশি আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কিভাবে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেবেন এবং আপনি যদি একজন শিক্ষক হয়ে থাকেন তাহলে– সে ক্ষেত্রে বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য হিসেবে কোন কোন বিষয়গুলো তুলে ধরবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার জন্য ধারাবাহিকভাবে নিজের কাজগুলো করতে হবে আপনাকে। যথা:
প্রথমত: নিজেকে স্বাভাবিকভাবে মঞ্চে উপস্থাপন করবেন। কেননা অনেকেই বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে নার্ভাস ফিল করেন। সত্যি বলতে এতে নার্ভাস হবার মতো তেমন কিছুই নেই। এটা একটা অনুষ্ঠান আর আপনি সেখানে শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস শেয়ার করবেন।
আর আপনি যদি শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে ছোট ভাই অথবা বোন হিসেবে বড় ভাইবোনদের কে উদ্দেশ্য করে কিছু অনুনয় বা বিনয়মূলক কথা বলবেন। যেমন ধরুন:- বড় ভাইয়েরা বা বোনেরা যতদিন যাবত স্কুলে ছিল তাদের কাছ থেকে আপনি কি কি শিক্ষা পেয়েছেন এবং তারা আপনার শিক্ষাজীবনে ঠিক কিভাবে ভূমিকা রেখেছে, আবার তারা যে বিদ্যালয় বা কলেজ থেকে বিদায় নিচ্ছেন সেক্ষেত্রে আপনার অনুভূতি কেমন কাজ করছে এবং আপনি তাদেরকে কতটা ভালোবাসেন সে সম্পর্কে।
আর যদি শিক্ষক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মূলত তুলে ধরতে হবে তাদেরকে নিয়ে উপদেশ মূলক এবং ভালোবাসা জনক কিছু কথা। কেননা স্কুল জীবনে ছাত্রছাত্রীরা অনেক ভুল ত্রুটি করে থাকে, আবার আনন্দ মজার ছলে বেশ ভালো কাজকর্মও সম্পন্ন করে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেহেতু দেশের ভবিষ্যৎ তাই শিক্ষক বা গুরুজন হিসেবে আপনি তাদেরকে ভবিষ্যতের জন্য ভালো কিছু কামনা করে তাদের ভালো ও মন্দের কিছু বিষয় উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরবেন, যেটা তাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
দ্বিতীয়ত: সবশেষে আপনার সামনে উপস্থিত তো সবাইকে সালাম জানিয়ে শেষ করবেন আপনার বক্তব্য। এবার আসুন উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক। মূলত বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তৃতা বা বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য পেশ করার জন্য শুরুতে আপনি কিভাবে ইন্ট্রো দেবেন এবং কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন!
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল (ছবি সহ)
উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম
উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম হলো:-
প্রথমেই সবাইকে সালাম জানানো এবং স্বাভাবিক মত বিনিময় করা। যেমন বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে– বলতে হবে আমার সামনে উপস্থিত সভাপতি এবং সম্মানিত অতিথিবর্গ, আমার শিক্ষকগণ এবং আমার সামনে উপস্থিত অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সবার প্রতি রইল আমার শ্রদ্ধা ও সালাম। সকলে আমার সালাম নিবেন আসসালামু আলাইকুম।
এরপর দ্বিতীয় স্টেপে গিয়ে আপনাকে একটা সুন্দর দুই থেকে তিন লাইনের ছন্দ বলার চেষ্টা করতে হবে। যেটা বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্যের সাথে মানানসই। মূলত বিদায় ছন্দ বলার পরবর্তীতে শুরু করতে হবে আপনার মূল বক্তব্য।
চেষ্টা করবেন বিদায়ী বক্তব্য যেন এমন হয় যেটা শুনে সবাই অনেক বেশি আনন্দিত হয় এবং উপস্থিত সকলের চোখে পানি চলে আসে। মূলত এমন ভাবে আপনাকে আপনার বক্তব্য পেশ করতে হবে যেটা অনেকটা ইমোশনাল মূলক হবে এবং বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তার মাঝে থাকবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস।
তাছাড়াও যারা সচরাচর এমন প্রশ্ন করে থাকেন কিভাবে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দিতে হয়? তাদেরকে বলব বিষয়টি আরো সুস্পষ্ট ভাবে বোঝার জন্য নিচের পয়েন্ট গুলো পড়ে ফেলুন।
- বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার জন্য প্রথমে শুভেচ্ছা বক্তব্য পেশ করতে হয়
- পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তুলে ধরতে হয়।
- এ পর্যায়ে আপনি যদি শিক্ষক হয়ে থাকেন তাহলে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে এমন কিছু বলতে হবে যেটা তাদের ভুল এবং ত্রুটি পাশাপাশি ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেবে। অন্যদিকে আপনি যদি শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে এক্ষেত্রে কিভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আপনার বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষা দিয়েছেন এবং কিভাবে আপনারা পড়াশোনা করেছেন তারা আপনাদের জন্য কতটা কষ্ট করেছে এই বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।
- চতুর্থ পর্যায়ে আপনি অভিভাবকদের সম্পর্কে কিছু বিষয় নিয়ে আসবেন এবং এরপর সহপাঠীদের সম্পর্কে বলবেন।
- সহপাঠীরা ছাড়াও স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজদের সম্পর্কেও বক্তব্যে কিছু বিষয়ে তুলে ধরতে হবে আপনাকে। এ পর্যায়ে মূলত আপনি ছোটদের উদ্দেশ্য করে কিছু সফল হওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগী পূর্ণ বাক্য তুলে ধরতে পারেন। যেমন শিক্ষকদের দিকনির্দেশনা মেনে চলার গুরুত্ব, কিভাবে ভালো পড়াশোনা করা যায় এবং বাবা-মায়ের আদর্শ ছেলে হওয়ার প্রয়োজনীয়তা ও দেশ ও জাতির কল্যাণে কিভাবে কোন রাস্তায় এগিয়ে চলা জরুরি ইত্যাদি সম্পর্কে।
তবে হ্যাঁ একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন, আপনি উপদেশমূলক কথা বলুন অথবা বিনয়মূলক। বক্তব্য দেওয়ার সময় অবশ্যই উচ্চস্বরে বক্তব্য দেওয়া যাবে না যেটা শুনে মানুষ অস্বাভাবিক মনে করে এবং সেটা নম্রতা হারিয়ে ফেলে। অবশ্যই আপনাকে ভদ্রভাবে আপনার বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য পেশ করতে হবে।
কখনো কখনো শিক্ষার্থী হিসেবে বিদায় অনুষ্ঠানে কিছু শিক্ষার্থী ভুলবশত শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে কিছু ব্যক্তিগত আঘাত করে কথা বলে। যেটা একদমই আদর্শ শিক্ষার্থীর পরিচয় বহন করে না। তাই অবশ্যই মাথায় রাখবেন কাউকে ব্যক্তিগত আঘাত করে কোন কথা না বলার বিষয়টির ওপরে। সেই সাথে নির্দিষ্ট কারো প্রশংসা করেও বক্তব্য উপস্থাপন করা উচিত নয়।
আর যেহেতু আপনি একজন শিক্ষার্থী তাই কখনোই শিক্ষকদের মন্দ বলা উচিত হবে না বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। সেই সাথে রাজনৈতিক বিষয়ে তুলে ধরা থেকেও বিরত থাকতে হবে। আমাদের উল্লেখিত বিষয়গুলো আরো সুস্পষ্টভাবে বোঝার জন্য এবার বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য বাংলায় উল্লেখিত নমুনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি এই নমুনা বা উদাহরণ কৃত বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য আপনাদের কাজে আসবে।
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য বাংলা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আমার সামনে উপস্থিত প্রধান অতিথি এবং অত্র বিদ্যালেয়র প্রধান শিক্ষক মহোদয়, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলী ও আমার প্রাণ প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী সহপাঠী এবং ছোট ভাই-বোনেরা সবাইকে জানাই আমার সালাম, আস্ সালামু আলাইকুম।
এসেছে বিদায়ের বেলা, যেতে নাহি মন চায়
থেকে যেতে চাই তবু, সময় বলে এগিয়ে যাই
বিদায় যে নিতে হবে এটাই বাস্তবতা ,
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলাই জীবনের পরিপূর্ণতা
হে স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠঃ তুমি কত সুন্দর দৃষ্টিনন্দন জানিনা । তবে তোমার সু- ক্ষ্যাতি অঞ্চল ব্যাপী। তোমার মত স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। তোমার যে মনোরম পরিবেশ অবস্থান, কোমলমতি পাঠদান তা আমার অন্তরে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলীঃ জানার ব্যাপারে আপনারা ছিলেন মহীরুহ বৃক্ষ। শিখনের ক্ষেত্রে আপনাদের ছিলো আমায় কথায় প্রকাশ। সদ্য ডিম থেকে ফুটে ওঠা বাচ্চা পাখির মুখে যেমন মা পাখি মুখে খাবার তুলে খাওয়ায় উড়তে না শেখা পর্যন্ত, , আপনারা ঠিক আমাদের তেমন করেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন
আপনাদের এই মাতৃসুলভ আচরণ আজীবন মনে থাকবে প্রিয় অভিভাবক। একজন জন্মদাতা পিতা মাতা যেমন তার সন্তানদের হাত ধরেপথ চলতে শিখায় , সেই হাঁটতে শিখানো হাতটা আপনাদের হাতে এসে নিশ্চিন্তে ছেড়ে দেয়। এর চাইতে আর কোন বড় অভিভাবক থাকতে পারে?
আপনাদের ভালোবাসা এবং নৈতিক শিক্ষায় আমাদের নির্ভীক করে তোলে। এরপরেও অনেক সময় আমরা আপনাদের মূল্য বুঝিনা। না বুঝে অনেক সময় অনেক বেয়াদবি করে ফেলি , শেখার ক্ষেত্রে থাকে অনীহা। আপনারা সামান্যতম কষ্ট না নিয়ে আমাদের আলোর পথের পথিক বানাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। বিদায় ক্ষণে আমাদের পুরাতন দিনের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এই কামনা করি। আমরাও কোনদিনও আপনাদের ভুলবো না।
প্রিয় সহপাঠীঃ কি যে কোথা থেকে এসে এত প্রিয় হয়ে উঠেছিলাম তা আজ মনে নেই । শুধু মনে আছে অসংখ্য স্মৃতি ঘেরা মুহূর্ত । যা অবলীলায় চোখের সামনে ভেসে উঠছে আজ। কবে যে কখনও হয়েছিলাম আপন আজ আর মনে নেই।
তবে কেন যেন হচ্ছে মনে, দেহ থেকে প্রাণ টাকে দিয়ে দিচ্ছি বিদায়। যদিও এ বিদায় কালের যাত্রা , সময়ের একান্ত চাওয়া মাত্র। আমাদের এই বিদায়ে শুধুমাত্র স্থান পরিবর্তনের। অন্তঃকরণে আমরা সবাই একত্ব। যে যেখানেই থাকি না কেন মনের সুতায় গেথে থাকবো।
আর শোনো হে স্নেহের ছোট ভাই ও বোনেরাঃ
” কি বলিব আজ তোমাদের তরে,
পুরনো অনেক স্মৃতি আজ শুধুই মনে পড়ে। ”
যেতে নাহি মন চায় তবু যেতে হবে
বিদায়ের বেলা যে অতি নিকটনে।
তোমাদেরকে কতটুকু পেরেছি জানি না তোমাদের থেকে পেয়েছি শ্রদ্ধার্ঘ্য সাজ, সেগুলি মনে পড়ছে আজ। চলার পথে দীর্ঘ পথচলা যখন, তখন তো ছোটখাটো ভুলত্রুটি ভেদাভেদ থাকতেই পারে। আজ সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তোমাদের নিকট ক্ষমার হাত বাড়িয়ে দিলাম। ভালো থেকো সকলে দোয়া করও মোর তরে। বাস্তবতার তাগিদে মেতেছে বিদায় আসিব কখনো কখনো তোমাদের মাঝে আবারো ফিরে। সবাইকে সালাম জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি আসসালামু আলাইকুম এবং সবাইকে জানাই আল্লাহ হাফেজ।
বিদায়ী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ছোটদের বক্তব্য
ইতোমধ্যে আমরা যে বক্তব্যটি তুলে ধরেছি এটা মূলত বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য। এ পর্যায়ে তুলে ধরা বক্তব্যটি আপনি বিদায়ী ছাত্রদের উদ্দেশ্য করে বলতে পারবেন অর্থাৎ ছোটদের বক্তব্য। তাই আপনি যদি সিনিয়রদের উদ্দেশ্যে বিদায় অনুষ্ঠানে কোন বক্তব্য রাখতে চান তাহলে নিচের নমুনাটি করে ফেলুন।
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম, আমার সামনে উপস্থিত প্রধান অতিথি এবং অত্র বিদ্যালেয়র প্রধান শিক্ষক মহোদয়, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলী ও আমার প্রাণ প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী সহপাঠী এবং ছোট ভাই-বোনেরা সবাইকে জানাই আমার সালাম, আস্ সালামু আলাইকুম।
অত্যান্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে আজ আমাদের বড় ভাইদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি। আমরা এখানে ভাই বোনের মত ছিলাম। শিক্ষকেরা আমাদের বাবা-মায়ের মতো ছিলেন।
আপনাদের অনুসরণ করে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। আপনাদের নিকট আমরা অনেক কিছু শিখেছি। এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আপনাদেরকে আজ অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। বিদায় সবাইকেই নিতে হবে।
ড্যাফোডিল ফুলের মতো সকালে ফোটে, দুপুর গড়াতে না গড়াতেই তা ঝরে পড়ে। মূলত আমাদের জীবনতো খুবই ছোট। এই স্কুল জীবনটা আরো ছোট। শীতের শিশির বিন্দুর মতোই বেলা বাড়ার সাথে সাথেই তা মিলিয়ে যায়। আমরাও খুব শিগগিরই বিদায় নিয়ে আপনাদের পিছু পিছু চলে আসব।
মায়া, মমতা আর ভালবাসা নিয়েই আমরা পৃথিবীতে বেঁচে থাকি। তাই আমরা যে পরিবারে, যে সমাজে জীবন যাপন করি, তার প্রতি আমাদের মায়া জন্ম নেয়। আর এই মায়া কাটিয়ে চলে যেতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলে মানুষ। ভাবুন এই সেদিন আমরা এই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম।
গুনতে গুনতে ৯টি বছর পার করে ফেলেছি। আজো আমার চোখে ভাসে সেদিনের কথা যেদিন ছোট্ট কচি হাত দিয়ে বাবার হাত ধরে এই স্কুলে এসেছিলাম। আজ শারিরীক ও মানসিক ভাবে আমরা বেড়ে উঠেছি কত তাড়াতাড়ি।এভাবেই বড় হই আমরা। বড় হই আরো বড়। ছড়িয়ে পড়ি দেশে বিদেশে নিজেদের অন্ন সংস্থানের জন্য।
পৃথিবী যেহেতু গোলাকার, তাই আমাদের মাঝে আবারো দেখা হয়। দেখা হবে। কথা হবে। এতেই আমরা সন্তুষ্ট থাকি। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে পরের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আপনারা বিদায় নিচ্ছেন।আপনাদের জন্য আমাদের দোয়া ও আশির্বাদ থাকেব যেন আপনার সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পদার্পান করতে পারেন।
আপনারা যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারেন। আমরাও আপনাদের চলা পথ ধরে এগিয়ে যেতে চাই।এছাড়া এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের সাথে আমাদের আচরণ বা ব্যবহারে কোন কষ্ট পেয়ে থাকলে নিজগুনে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
ছাত্রদের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষকের বক্তব্য
ইতোমধ্যে আমরা ছাত্রদের বিদায় অনুষ্ঠানের শিক্ষকদের বক্তব্যে মূলত কোন কোন বিষয় থাকা জরুরী তা উল্লেখ করেছি। তবুও নমুনা চিত্র হিসেবে নিচের ইমেজটি পড়ুন।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানছি এখানেই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
One Comment