জেনে নিনি- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কে A টু Z
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাঃ শিক্ষক সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে অত্যন্ত মর্যাদা ও সম্মানের পাত্র। আর তাইতো উন্নত বিশ্বের শিক্ষকতা পেশাকে শ্রেষ্ঠ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। একটি দেশে ন্যায় বিচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সুশিক্ষা ও আদর্শ জাতি গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম।
একটু আলাদাভাবে চিন্তা করলে আপনি সম্পূর্ণভাবে এটা উপলব্ধি করতে পারবেন যে— শিক্ষা আলোকিত সমাজ বিনির্মাণের হাতিয়ার। আর আপনি এটা অবশ্যই স্বীকার করবেন শিক্ষকতাই সব পেশার সেরা। আর তাইতো আমাদের দেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ রয়েছেন যারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে অনেক বেশি আগ্রহী। আর তাই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কে সমস্ত বৃত্তান্ত জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন অনেকেই।
তো যে বা যারা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কে এ টু জেড জানতে আগ্রহী, তাদেরকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের প্রবন্ধে। কেননা আজ আমরা শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় আরো কিছু বিষয়াবলী সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে আসুন জেনে নেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত।
আরো পড়ুনঃ সিভি লেখার নিয়ম | সিভি ফরমেট কেমন হওয়া উচিত?
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কবে হবে, নিয়োগ পরীক্ষায় টিকতে চাইলে কি কি বিষয় মাথায় রাখতে হবে? প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ধাপসমূহ কি কি? প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতির কৌশল কি ইত্যাদি এ বিষয়ে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করব আমরা আমাদের আজকের প্রবন্ধে।
তাই যারা আদর্শ কারিগর গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চান, তারা অবশ্যই আমাদের আজকের আলোচনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা শিক্ষকের অন্যতম একটি দায়িত্ব এবং কর্তব্য হচ্ছে শিক্ষার আলো শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া এবং জাতির ভবিষ্যৎ যেন উচ্চশিক্ষিত হয় সেই প্রচেষ্টায় অনবরত জ্ঞান দান করা।
একজন শিক্ষককে অতি উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলা যথেষ্ট যে— মানবজাতির সবচেয়ে বড় শিক্ষক বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও শিক্ষক হিসেবে গর্ব অনুভব করতেন। তিনি তার অন্যতম দোয়ায় বলেছেন— ” হে আল্লাহ আপনি শিক্ষকদেরকে ক্ষমা করুন তাদেরকে দান করুন দীর্ঘ জীবন।” সুবাহানাল্লাহ।
আর যে বা যারা মুসলিম ধর্মাবলম্বীর অন্তর্ভুক্ত ঠিক একইভাবে যারা কোরআন, গীতা, বাইবেল সম্পর্কে অবগত তারা অবশ্যই এই বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করবেন। কেননা প্রত্যেক ধর্মে শিক্ষকদেরকে আলাদা মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। একজন শিক্ষক একজন পিতা-মাতা সমতুল্য। আর তাইতো আমাদের ধর্মে সর্বদা এই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে যে– শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা প্রদান করা এবং তাদের প্রদানকৃত জ্ঞান ভালোভাবে উপলব্ধি করে নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করা।
শিক্ষকতা কেমন পেশা | একজন শিক্ষকের কেমন হওয়া উচিত?
শিক্ষকতা হল সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন একটি পেশা। কেননা শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষা দান করা জীবনের সবচেয়ে জটিল এবং কঠিন কাজ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হিসেবে বিবেচিত। মূলত মানুষকে যারা সুশিক্ষা প্রদান করেন তারাই হলেন আদর্শ শিক্ষক। সর্বদা সবসময় শিক্ষককে জীবন্ত উপাদান নিয়ে কাজ করতে হয় বিধায় শিক্ষকতা উচ্চদরের শিল্প।
তাছাড়াও শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার আড়ালে রয়েছে বেশ কিছু অন্যতম কারণ। যেগুলো সম্পর্কে আমরা কিছু কিছু অবগত আবার কিছু কিছু অবগত নয়। তবে হ্যাঁ আমাদের মাঝে কিছু মানুষ একটি প্রশ্ন করে থাকেন সেটা হলো— একজন ভালো শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য কি কি? আদর্শ শিক্ষক হতে হলে কোন কোন গুণাবলী থাকতে হবে একটি শিক্ষকের মাঝে!
সত্যি বলতে এই প্রশ্নের উত্তর আপনি প্র্যাকটিক্যালি বুঝতে পারবেন এবং খুঁজে পাবেন যদি আপনি শিক্ষকদের মাঝে কিছুদিন যাবত অবস্থান করেন। কেননা একজন ভালো শিক্ষকের গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্য তার আচার-আচরণের মাধ্যমে আপনার কাছে সুস্পষ্ট হবে এবং আপনি সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই যাচাই করতে পারবেন কোন শিক্ষক আদর্শ এবং কোন শিক্ষক নামে মাত্রই শুধু শিক্ষক। তবুও এ পর্যায়ে আমরা আদর্শ শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য সমূহ তুলে ধরব। তাহলে আসুন জেনে নেই একজন ভালো শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
- ভালো শিক্ষকের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো সুমধুর ব্যক্তিত্ব।
- সুস্বাস্থ্য, প্রাণবন্ত ও শান্ত মেজাজের অধিকারী। কেননা সুস্বাস্থ্য ছাড়া এগুনগুলির অধিকারী হওয়া একজন শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নয়।
- উদ্দীপনার সঞ্চারকারী ও সুশিক্ষক শিক্ষার্থীর হৃদয়ে শিক্ষার জনের অনুকূল প্রেরণা ও উদ্দীপনার কলাকৌশল প্রয়োগে সুনিপুণ এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনোযোগী।
- একজন শিক্ষকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নবীন মন। মূলত অনুরাগের প্রতিফলনে একজন শিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের আপনজন হওয়ার যোগ্যতা অধিকার ও গৌরব লাভ করেন।
- শিশুরঞ্জন মানসিকতা সম্পন্ন হবেন একজন আদর্শ শিক্ষক সেই সাথে সুশিক্ষকের একটি মূল্যবান সম্পদ হবে মৌলিকতা।
- নমনীয়তা ও দৃঢ় মানসিকতা একজন শিক্ষকের অন্যতম গুণাবলী।
- পাশাপাশি মার্জিত পোশাক, উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা, নেতৃত্ব দেন উদ্যমশীলতা, সামাজিকতা বোধ, মুদ্রা দোষ মুক্ত, অধ্যায়নশীল, আত্ম মূল্যায়ন শিক্ষণ পদ্ধতি সংক্রান্ত জ্ঞানসম্পন্ন এবং সুন্দর মনের অধিকারী।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ধাপ
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ধাপ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন মানুষের মনে মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে। আর তাই আলোচনার এই পর্যায়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি ও বুক লিস্ট সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করব। পাশাপাশি জানাবো প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ধাপ কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে।
আমরা ইতোমধ্যে এটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে— পৃথিবীতে শিক্ষকতার মত মহান পেশাবধায় আর একটিও নেই। এটি একটি আদর্শ ও মর্যাদা সম্পন্ন পরিষেবা। প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষক হওয়া যায়। তবে প্রাথমিক শিক্ষক হওয়ার জন্য যোগ্যতা হিসেবে কিছু কিছু বিষয় যাচাই-বাছাই করা হয়। মাঝে মাঝে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষক নিয়োগ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার প্রকাশিত হয়।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার থেকে আপনি খুব সহজেই আবেদন করতে পারেন সে সময়। আর এর জন্য যোগ্যতা হিসেবে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে নিতে হয় সার্কুলার এ উল্লেখিত শর্তাবলী। তবে অনেকেই জানেন না প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ধাপ বা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ধাপগুলো সম্পর্কে।
মূলত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাটি দুটি ধাপে সম্পন্ন হয়। যথা:
- রিটেন
- ভাইবা।
আপনি যদি রিটেন অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষায় টিকে যেতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার মৌখিক সুতরাং ভাইভা পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। আর ভাইভাতে যদি টিকে চান তাহলেই আপনি নিজেকে একজন শিক্ষক হিসেবে সমাজের চোখে পরিচয় দিতে পারবেন।
আর তাই শূন্য থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়াটা অধিক বেশি জরুরি আপনার, যদি আপনার ক্যারিয়ারের অন্যতম লক্ষ্য থাকে শিক্ষকতা কে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া। তাই শুরু থেকেই মনোযোগ সহকারে পড়ুন সাধারণ জ্ঞান অর্জন করুন, সব সময় ইংরেজি ভাষা শেখাতে ইন্টারেস্টেট হোন। সব সময় চেষ্টা করুন নতুন কিছু জানার নতুন নতুন বই পড়ার। কেননা একজন আদর্শ শিক্ষক হবার জন্য জ্ঞানের পরিসীমাটা প্রসারিত হওয়া জরুরী।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় টিকে যাওয়ার উপায়
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় টিকে যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে ভালো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আমাদের মাঝে কিছু মানুষ রয়েছেন যারা কেবল চাকরি পরীক্ষায় উপস্থিত হন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। প্রথমে যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তারা ধরেই নেন যে আপনি এই চাকরিটি পাচ্ছেন না। মূলত আপনার চিন্তাভাবনা যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় টিকে থাকতে পারবেন না এটা স্বাভাবিক। আবার আমাদের মাঝে এমন কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছেন– যারা শুধু পরীক্ষার জন্যই পরীক্ষা দেন। তেমন কোন প্রস্তুতি নেই বা প্রস্তুতি নেবেন তেমন কোনো আশা প্রত্যাশাও কাজ করে না।
শুধু তাই নয় আবার এমন পার্থীও রয়েছেন যাদের প্রস্তুতি নেওয়ার ইচ্ছে ও চাকরি পাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কি পড়বেন আর কি বাদ রাখবেন এ নিয়েই কনফিউশনে রয়েছেন। আর তাইতো ১৩ লাখ দশ লাখ চাকরি পাত্রীর মধ্যে শুধুমাত্র এক লাখ থেকে দেড় লাখের মধ্যেই মূল প্রতিযোগিতা হয় বলে ধারণা করা হয়। মূলত 13, 14, 15 লাখ মানুষদের মধ্যে মাত্র দুই থেকে তিন লাখ মানুষ থাকেন অত্যন্ত সিরিয়াস এবং তারা সেরকম প্রস্তুতি নিয়ে তবেই পরীক্ষা দিচ্ছেন। আমাদের মাঝে এমন কিছু কিছু প্রার্থী রয়েছেন যারা দুই তিনবার ভাইবা দিয়েছেন অথচ চাকরি হয়নি। আবার এমনও আশেপাশে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন– যারা প্রথমবারেই চাকতে জয়েন করছেন।
মূলত এক্ষেত্রে আপনার এবং তার মধ্যে পার্থক্য এটা নয় যে সে ঘুষ দিয়েছে বা তার অনেক ক্ষমতা। বর্তমানে প্রশাসনিক কাজকর্মে অবশ্যই ঘুষ ও প্রতারণার ব্যাপার জড়িয়ে রয়েছে এটা সত্য। তবে এটাও সত্যি যে যোগ্যতা এবং নিজের দক্ষতা অবশ্যই একটি মানুষকে তার সঠিক মর্যাদা প্রদান করে। তাই আপনি যদি ঠিকঠাক প্রস্তুতি নেন এবং শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতা সম্পন্ন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি যেকোনো পরীক্ষায় টিকে যাবেন এবং আপনারও চাকরি অবশ্যই হবে। তবে আলোচনার এ পর্যায়ে মূলত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় টিকে যাবার কিছু অল্প সংখ্যক টিপস শেয়ার করব। তাহলে চলুন সেই টিপস গুলোর সম্পর্কে অবগত হওয়া যাক।
১. এমসিকিউ (MCQ) প্রশ্নের দিকে অধিক বেশি নজর রাখা।
২. পরীক্ষা কে ভয় মনে না করে স্বাভাবিক ভাবে নেওয়া অর্থাৎ নার্ভাস ফিল না করা।
৩. বাংলা ব্যাকরণ, ইংরেজি ব্যাকরণ ও গণিতে সাধারণ বিষয় গুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা।
৪. কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স গুলো নিয়মিত পড়া।
৫. প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ এনালাইসিস সহ জনপ্রিয় কিছু বই পড়া।
মূল কথা– প্রথমত: আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সম্পর্কে পড়তে হবে দ্বিতীয়তঃ এনালাইসিস করতে হবে। কেননা আপনি যদি কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পরীক্ষায় যে কোন প্রশ্নের আনসার করতে পারবেন। মনে রাখবেন প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নিয়োগ পরীক্ষা। আর এত বড় সুযোগ অন্য কোন চাকরির ক্ষেত্রে আপনি পাবেন না। তাই এই পরীক্ষায় টিকে যেতে চাইলে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বারবার পড়ুন, পরীক্ষায় বেশি নম্বর তোলার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবটা করার চেষ্টা করুন।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পাস নম্বর
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এমসিকিউ হয়ে থাকে ৮০ নম্বরের। অপরদিকে ভাইবার জন্য মার্ক নির্ধারণ থাকে মাত্র ২০। তবে সচরাচর সবাই এই প্রশ্নটি করে থাকেন যে– এমসিকিউ অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষায় ৮০ নম্বরের মধ্যে কত পেলে পাস?
সত্যি বলতে এই প্রশ্নের সোজাসুজি স্ট্রেটকাট উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কেন না প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পাস নম্বর মূলত বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো:
- পরীক্ষার প্রশ্ন কতটা সহজ বা কতটা কঠিন।
- পরীক্ষার নিয়োগে কতজন নিয়োগ দেওয়া হবে
- পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেমন হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে।
মূলত এই তিনটি বিষয়ে যদি স্বাভাবিক হয়ে থাকে তাহলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পাশ নম্বর ৬০ থেকে ৬৫-র মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে হ্যাঁ মাথায় রাখবেন কোটা ধারীদের জন্য পাস মার্ক ৫০ থেকে ৫৫ এর মধ্যে হয়ে থাকে।
অপরদিকে মৌখিক অর্থাৎ ভাইভা পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে গড়ে ১২ অথবা ১৪ পেলে পাস। কিন্তু আপনি যদি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভালোভাবে টিকে যেতে চান তাহলে mcq প্রশ্নগুলো ভালো মতন আনসার করতে হবে কেননা এই নম্বরের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করবে যে আপনার চাকরিটি হচ্ছে কিনা।
প্রাথমিক শিক্ষক বদলির অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার যোগ্যতা
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা হিসেবে থাকতে হবে কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় শ্রেণীর বা সমমানের জিপিএ স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী। চারটি স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ এবং ৫ স্কেলে ২.৮ সি জি পি এ থাকতে হবে। তাই আপনার যদি এই যোগ্যতার সাথে মিলে যায় তাহলে আপনি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এর জন্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের সর্বশেষ খবর, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কোন জেলায় কতজন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সময়সীমা এবং প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ইত্যাদি বিষয় বলে সম্পর্কে আপডেট খবর জানার চেষ্টা করুন।
কেননা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সার্কুলার প্রকাশিত হলে এই সমস্ত ইনফরমেশন আপনি অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে পেয়ে যাবেন। তবে এ বিষয়ে যে কোন ইনফরমেশন পেতে চোখ রাখতে পারেন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। কেন না প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কিত সকল আপডেট কৃত সার্কুলার আমরা আমাদের এই সাইটে সবার প্রথমে পোস্ট করার চেষ্টা করব।
তো প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, যদি আপনি কোন পোষ্টের নোটিফিকেশন সবার আগে পেতে চান তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। অথবা নোটিফিকেশনের জন্য হ্যাঁ এবং না এর মধ্যে থেকে হ্যাঁ বাটনটি ক্লিক করুন। তাহলে এবার আসুন পরবর্তী ধাপে জেনে নেই প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক পদের বেতন গ্রেড মোটামুটি কত এবং নিয়োগের বয়সসীমা টা কত পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক পদের বেতন গ্রেড কত?
প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক পদের বেতন গ্রেড ২০১৫ অনুযায়ী ১১০০০ থেকে ২৬,৫৯০ টাকা।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের বয়সসীমা
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের বয়সসীমা ২১ থেকে ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অথবা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স হতে পারে ২১ থেকে ৩২ বছর।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস কি? এ প্রশ্নটির স্বাভাবিকভাবেই অনেকে করে থাকেন। মূলত প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস ইংরেজি গণিত বাংলা ও সাধারণ জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
কেন না প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগে ৮০ নম্বরের পরীক্ষা mcq এর হয়ে থাকে। যেগুলো প্রত্যেকটি বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করা হয়। সাধারণ জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হচ্ছে:
- বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক
- কম্পিউটার
- বিজ্ঞান বিষয়ক বিষয়বস্তু।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বুক লিস্ট
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বাংলা বিষয়ের বুকলিস্ট হচ্ছে:
- নবম থেকে দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ বই
- অগ্রদূত ও অভিযাত্রী প্রকাশনীর জন্য বই
- শিকড় গ্রন্থ সমালোচনা, মহশিনা নাজিলার বই
- রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্কিমচন্দ্র, জহির রায়হান, জসিম উদ্দিন ও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কিত নানা বই।
ইংরেজি বিষয়ের বুক লিস্ট
- Cliff’s Toefl বইটির গ্রামার অংশ
- জাহাঙ্গীর আলম স্যারের Master English বই
গণিত বিষয়ের বুক লিস্ট
- খাইরুলস প্রাথমিক শিক্ষক গাইড
- প্রফেসরস প্রাথমিক শিক্ষক গাইড
সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের বুকলিস্ট
- বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক এর জন্য এমপিথ্রির বইগুলো পড়তে পারেন।
- কম্পিউটার এর জন্য ইজি পাবলিকেশন্স এর একটি বই আছে। বইটি বেশ ভালো।
- বিজ্ঞান এর জন্য “ওরাকল বিজ্ঞান” পড়লেই চলবে।
- সাম্প্রতিক তথ্যের জন্য ২-৩ মাসের “কারেন্ট এফেয়ার্স” পড়ে নিবেন।
তবে এর পাশাপাশি বিগত বছরের সলিউশনের জন্য প্রফেসরের গাইড এবং প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ গাইড ও সহায়িকা হিসেবে প্রফেসর অথবা খায়রুল এর একটি গাইড পড়তে পারেন।
পরিশেষে: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষয় অংশগ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ঠিকঠাক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরী। তো ফ্রেন্ডস আজকের আলোচনা এপর্যন্তই। অবশ্যই আপনাদের মতামত কমেন্ট করে জানাবেন এবং নিয়মিত আমাদের পোস্টের নোটিফিকেশন পেতে সাথে থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
2 Comments