বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

জেনে নিন- বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে সবকিছু

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ হচ্ছে– বাংলাদেশের কাওমি মাদ্রাসাসমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড, যাকে সংক্ষেপে বলা হয় বেফাক। আজকের এই আলোচনায় আমরা মূলত– বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে সবকিছু আলোচনা করব। কেননা অনেকেই বাংলাদেশের বৃহত্তম কাওমি মাদ্রাসা বেফাক সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন না।

আবার যারা উক্ত মাদ্রাসার গর্বিত ছাত্র তাদের মূলত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানার থাকে। সেটা হতে পারে পরীক্ষা সংক্রান্ত আবার পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত। আর তাই সেই সকল বিষয় নিয়ে সাজিয়েছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি। মূলত আজকের এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়লে আপনি জানতে পারবেন:-

  • বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ওয়েবসাইট ও প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে
  • বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের রূপরেখা সম্পর্কে
  • বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়বস্তু সম্পর্কে
  • বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বৈষয়িক জ্ঞান বিজ্ঞান সমূহ সম্পর্কে
  • বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে

পাশাপাশি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট ২০২৩ দেখার নিয়ম, পরীক্ষার প্রশ্ন এবং সিলেবাস সমূহ সম্পর্কে এ টু জেড। তাহলে আসুন ধারাবাহিকভাবে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে সবকিছু সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে সুস্পষ্ট ভাবে জেনে নেওয়া যাক।

মুক্তপাঠ সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

বাংলাদেশে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড নামে পরিচিত। কেননা এটি হচ্ছে সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড। তবে এই বোর্ডের ধরন বেসরকারি। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ডের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে– বাংলাদেশের কাওমি মাদ্রাসা সমূহের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন উন্নয়ন এবং সনদ প্রদান সহ ইত্যাদি কাজ সম্পাদন।

বাংলাদেশে কাওমি মাদ্রাসা সমূহের পাঁচটি শিক্ষা বোর্ড রয়েছে। আর এই বোর্ডগুলো মূলত তাদের নিবন্ধিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করে থাকে এবং বিভিন্ন স্তর ভেদে পরীক্ষাগ্রহণ করার বিনিময়ে সনপ্রধানের কাজ সম্পাদন করে। একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে এই কাওমি মাদ্রাসার অধীনে রয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি মাদ্রাসা।

আর এই মাদ্রাসাগুলোতে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করার মাধ্যমে নির্বাচন করা হয় যোগ্য ছাত্রকে। মূলত ২০২৩ সালের হিসেব অনুযায়ী বেফাক মাদ্রাসার সংখ্যা ১৭,৭১৪ টি। আর এই প্রত্যেকটি মাদ্রাসা থেকে মোটামুটি ২০২৩ সালে পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে 2 লক্ষ 61 হাজার 593 জন।

তাহলে বুঝতেই পারছেন, বাংলাদেশের বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া কতটা জনপ্রিয় এবং এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা কতটা ইসলামের পথে ধাবিত। এবার আসুন জেনে নেই– বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস অর্থাৎ এটি কবে কিভাবে কোথায় থেকে যাত্রা শুরু করে এবং কে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাককে!

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ইতিহাস

আজ থেকে ৪৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৮ সালে সর্বপ্রথম গঠিত হয় বেসরকারি শিক্ষা বোর্ড বেফাক। জানা যায় ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানটির অফিস ছিল জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ, ঢাকাতে। পরবর্তীতে ১৯৯৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছিল নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০

এরপর ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভাঙ্গা প্রেস অর্থাৎ কাজলা যাত্রাবাড়ী ঢাকা-১২০৪ এলাকায় জায়গা ক্রয় করে সেখানে পুনরায় বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের দিকে বেফাকের সভাপতি মৃত্যুবরণ করলে উক্ত পথ শুন্য হয়ে যায় আর ঠিক এ কারণে অভ্যন্তরীণ কিছু কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় সে সময়।

এরপর ২০২০ সালের তেসরা অক্টোবর ১২৫ সদস্যের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় নতুন একটি বৈঠকের। আর সেই বৈঠকে সভাপতি পদে মাহমুদুল হাসান তার দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ হন। সেই সাথে সিনিয়রসহ অফিসার হিসেবে যোগদান করেন নূর হোসেন কাসেমী। পাশাপাশি মহাসচিব পদে যোগদান করেন মাহফুজুল হক। এবার আসুন এই তিন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হওয়া যাক অর্থাৎ তারা কে, কোথায় অবস্থান করছেন এবং তাদের বংশ পরিচয় সম্পর্কে।

সভাপতি মাহমুদুল হাসান

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি মাহমুদুল হাসান। যিনি ১৯৫০ সালের ৫ই জুলাই ময়মনসিংহ জেলার কেতয়ালি থানার অন্তর্ভুক্ত চরখরিচাতে জন্মগ্রহণ করেন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। যার পিতার নাম গালিমুদ্দিন আহমদ এবং মাতা ফাতেমা রমজানী। 

তিনি একাধারে একজন বাংলাদেশী দেওবন্দী ইসলামী পন্ডিত, শিক্ষাবিদ লেখক ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। জেনে শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর যশোর রেলস্টেশনে মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন পরবর্তীতে ২০২০ সালের দিকে অক্টোবরের তিন তারিখে সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন বাংলাদেশের কাওমি মাদ্রাসা সমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড বেফাক এর। 

আপনি যদি এই ব্যক্তির সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এখনই ভিজিট করতে পারেন আমাদের সাজেস্টককৃত (ক্লিক করুন এখানে) এই লিংকে। কেননা উক্ত লিংকে ভিজিট করলে আপনি মাহমুদুল হাসান এর বংশ পরিচয় থেকে শুরু করে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সমস্ত কিছু জানতে পারবেন। 

সহ-সভাপতি নূর হুসাইন কাসেমী

বেফাক অর্থাৎ বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ড এর সহ-সভাপতি ছিলেন নূর হোসেন কাসেমী, যিনি একজন বাংলাদেশী দেওবন্দী ইসলামী পন্ডিত। পাশাপাশি রাজনীতিবিদ শিক্ষাবিদ এবং ধর্মীয় বক্তা। যিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৫ সালের ১০ই জানুয়ারি। তার জন্মস্থান কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানা। গ্রামের নাম চডডা। 

যিনি বাড়ির পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং ২০২০ সালের ৩রা অক্টোবর সহ-সভাপতি হিসেবে বৈঠকে নির্বাচিত হন। তবে এই মহান ব্যক্তিটি এখন মৃত। কেননা ২০২০ সালের অক্টোবরের তিন তারিখে সহ-সভাপতি হিসেবে বৈঠকে যোগদানের পরবর্তীতে তেসরা ডিসেম্বর তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। 

তবে হ্যাঁ, আপনি যদি তার পরিবার রাজনীতি এবং কর্মজীবন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এখনই ভিজিট করতে পারেন আমাদের উল্লেখিত লিংকে। (ক্লিক করুন এখানে)। কেননা এই পোস্টে কাওমি মাদ্রাসার সহ-সভাপতি নূর হুসাইন  কাসেমী সম্পর্কে সমস্ত কিছু তুলে ধরা হয়েছে। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক মহাসচিব পদে নিযুক্ত প্রাপ্ত মাহফুজুল হক এর পরিচয়। 

মহাসচিব মাহফুজুল হক

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর মহাসচিব পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন মোঃ মাহফুজুল হক। যিনি একজন বাংলাদেশী দেওবন্দী, ইসলামী পন্ডিত, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও ধর্মীয় বক্তা হিসেবে সুপরিচিত। যার জন্ম ঢাকা জেলার আজিমপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। জন্মের সময় সীমা ১৯৬৯ সালের নভেম্বর মাস। 

তিনি মূলত তার গ্রামের একটি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষার সূচনা ঘটান পরবর্তীতে 1991 সালে জামিয়া রাহমানিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস অর্থাৎ মাস্টার্স শেষ করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ গমন করে দ্বিতীয়বার আবারো মাস্টার সম্পন্ন করেন এবং ২০২০ সালে মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকারবদ্ধ হন তিনি। 

মহান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এই ইসলামী পন্ডিত এর জীবন বৃত্তান্ত এবং শিক্ষাজীবন কর্মজীবন ও পরিবার সম্পর্কে জানতে এখনই ভিজিট করতে পারেন আমাদের উল্লেখিত লিংকে। কেননা আপনি (ক্লিক করুন এখানে) উক্ত লিংক থেকে এ সম্পর্কে সমস্ত কিছু জানতে পারবেন। এবার আসুন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর রূপরেখা, ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়বস্তু এবং পরীক্ষা ও সিলেবাস সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে জেনে নেওয়া যাক।

পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর ধর্মীয় শিক্ষার বিষয় সমূহ

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়াতে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য ১১ টি বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:-

  • আরবি ভাষা, নহব, সরফ, বালাগাত ও আরুয।
  • ফিকহ ও উছুলে ফিকহ।
  • তাফসির ও উছুলে তাফসির।
  • ইসলামের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সিরাত।
  • ইসলামের অর্থনীতি।
  • ইসলামের সমাজ বিজ্ঞান ও সিরাত।
  • ইসলামের দর্শন।
  • পরিবার বিজ্ঞান।
  • হাদীস ও উছুলে হাদীস।
  • তাজবীদ এবং 
  • ফারাইয

পাশাপাশি বৈষয়িক জ্ঞান-বিজ্ঞান হিসেবে আরো রয়েছে:-

  • বাংলা ভাষা এবং বাংলা ব্যাকরণ।
  • ইংরেজি এবং ইংরেজি ব্যাকরণ।
  • উর্দূ ও উর্দূ কাওয়ায়েদ।
  • ভূগোল
  • বিজ্ঞান
  • যুক্তিবিদ্যা
  • মুনাযারা
  • পাশ্চাত্য দর্শন
  • ফারসি ও ফারসি কাওয়ায়েদ।
  • গণিত ও জ্যামিতি ও 
  • ইতিহাস। 

আর এখানে একজন শিক্ষার্থী মূলত ধর্মীয় জ্ঞান বিজ্ঞানের সাধারণ ধারা মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত পড়তে পারবে পাশাপাশি ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করারও ব্যবস্থাপনা চালু রয়েছে। এবার আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল সম্পর্কে।

এক নজরে বেফাক, বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড

প্রতিষ্ঠা সালঃ এপ্রিল ১৯৭৮; ৪৫ বছর আগে
ধরনঃ বেসরকারি শিক্ষা বোর্ড
আইনি অবস্থাঃ চালু
অবস্থানঃ কাজলা, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২৩৬
উদ্দেশ্যঃ বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা সমূহের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, উন্নয়ন এবং সনদ প্রদান ইত্যাদি।
যে অঞ্চলে কাজ করেঃ বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষাঃ বাংলা, আরবি
সদস্যপদঃ ২০,০০০ +
সভাপতিঃ মাহমুদুল হাসান
মহাসচিবঃ মাহফুজুল হক
মহাপরিচালকঃ উবায়দুর রহমান খান নদভী
মূল ব্যক্তিত্বঃ মাহমুদুল হাসান
প্রধান অঙ্গঃ মজলিসে শূরা, মজলিসে আমেলা
ওয়েবসাইটঃ www.wifaqbd.org 

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ সিলেবাস ২০২৩

আলোচনার শেষ পর্যায়ে আমরা বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পর্কে আলোচনা করব। তবে আলোচনার এ পর্যায়ে ২০২৩ সালের জন্য বেফাক প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের জন্য যে সিলেবাস প্রকাশ করেছে তা সম্পর্কে জানাবো আপনাদেরকে। 

তো আপনি যদি একজন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ বৃহত্তম শিক্ষা বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে ২০২৩ বেফাক পরীক্ষার সকল বিভাগের সিলেবাস এবং ফেরকায়ে এর বাতেলা নমুনা প্রশ্ন সম্পর্কে বিস্তারিত দেখে নিন এ পর্যায়ে। 

প্রত্যেক বছর মূলত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নতুন নতুন সিলেবাস প্রকাশ করা হয়। মূলত ২০২৩ সালের সিলেবাস ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি ৪৬ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পরবর্তীতে তার ফলাফল ও প্রকাশ পেয়েছে। আর তাই এ পর্যায়ে আমরা ২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য নিশাদ নির্ধারণ করা সহ মেশকাত জামাতেরফেরকায়ে বাতেলাহ এর নমুনা প্রশ্ন  তুলে ধরছি। যেটা দেখলে আপনি কিছুটা হলেও ধারণা নিতে পারবেন। আর তাই নিচে উল্লেখিত ইমেজ গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন:-

Befaqul Madarisil Arabia Bangladesh

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট ২০২৩

ইতোমধ্যে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট ২০২৩ প্রকাশিত হয়েছে। আর তাই যারা ৪৬ তম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তারা মূলত ১৫ ই এপ্রিল পরীক্ষার ফলাফল হাতে পেয়েছেন। কেননা কাওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ড এর কেন্দ্রীয় ৪৬ তম পরীক্ষার ফলাফলের সময়সূচী ছিল 15 এপ্রিল। 

আর আমরাই তো মধ্যে উল্লেখ করেছি প্রতিবছর মূলত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পরীক্ষার আয়োজন করা হয় শিক্ষার্থীদের জন্য। কিন্তু অনেকেই সরাসরি রেজাল্ট দেখার জন্য জানতে চান বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর রেজাল্ট দেখার নিয়ম কি? অনলাইনে বেফাক পরীক্ষার রেজাল্ট দেখতে চাইলে কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে এবং কোন কোন ইনস্ট্রাকশন ফলো করলে বেফাক পরীক্ষার রেজাল্ট সঠিক প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করা সম্ভব! 

আর তাই আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট দেখার নিয়ম স্টেপ বাই স্টেপ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। কেননা এই নিয়ম ফলো করে আপনি আমাদের উল্লেখিত ওয়েবসাইট ভিজিট করে সহজেই ব্যক্তিগত ফলাফল, মাদ্রাসাওয়ালি ফলাফল এবং মারহালাওয়ারি মেধা তালিকা সংগ্রহ করতে পারবেন। আর হ্যাঁ যদি আপনি শুধুমাত্র ২০২৩ সালের ফলাফল দেখতে চান তাহলে উক্ত ওয়েবসাইটে গিয়ে ফলাফল “২০২৩ দেখতে এখানে ক্লিক করুন” লেখাটির উপর একটা ক্লিক করে পরবর্তী সকল ইনফরমেশন পূরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার ফলাফল সংগ্রহ করতে পারবেন। 

সুতরাং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ পরীক্ষার ফলাফল দেখার জন্য পর্যায়ক্রমে আপনাকে যে কাজগুলো করতে হবে:–

প্রথমত: ভিজিট করতে হবে wifaqedu.com ওয়েবসাইট। 

দ্বিতীয়ত: নির্বাচন করতে হবে আপনার পরীক্ষার সাল। 

তৃতীয়ত: নির্বাচন করতে হবে মারহালা, অর্থাৎ তাকমীল, ফজিলত, হিফজুল কুরআন ইত্যাদি বিষয়বস্তুর মধ্যে আপনি যেটাতে পরীক্ষা দিয়েছেন তা নির্বাচন করতে হবে

চতুর্থত: ফাঁকা স্থানে বসাতে হবে রোল নম্বর। এ পর্যায়ে মূলত আপনাকে রোল নম্বরটি ইংরেজিতে লিখতে হবে। 

পঞ্চমত: ক্লিক করতে হবে সাবমিট বাটনে। 

ব্যাস আপনার কাজ এটুকুই। আপনি যদি সঠিক ইনফরমেশন প্রদান করে থাকেন তাহলে ব্যক্তিগত ফলাফল আপনার সামনে তুলে ধরা হবে। ঠিক একইভাবে আপনি যে কোন বছরের পরীক্ষার ফলাফল বের করতে পারবেন www.wifaqresult.com ওয়েব সাইটে গিয়ে। 

মূলত যেকোনো চাকরির পরীক্ষা বা যেকোনো প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষার ফলাফল আপনি যেমন অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার রোল নম্বর রেজিস্ট্রেশন নম্বর সেশন ইত্যাদি সিলেক্ট করার মাধ্যমে রেজাল্ট যাচাই করে থাকেন ঠিক একইভাবে বেফাক পরীক্ষার রেজাল্ট সংগ্রহের জন্য আপনাকে ওই একই নিয়ম ফলো করতে হবে। এবার আসুন– আলোচনা শেষ মুহূর্তে পড়ে ফেলা যাক বেফাকের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে। 

বেফাক এর বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩

মোট তিনটি পর্যায়ের বিভক্ত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানটির। 

প্রথম পর্যায়: এ পর্যায়ে মূলত প্রথম স্তর এবং দ্বিতীয় স্তর দুটি ভাগ রয়েছে। প্রথম স্তরে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করা হয় অন্যদিকে দ্বিতীয় স্তরে সাধারণ শিক্ষা সহ ইসলামিক শিক্ষা প্রদান করা হয়। 

দ্বিতীয় পর্যায়: মূলত দ্বিতীয় পর্যায়ে চারটি স্তর রয়েছে অর্থাৎ প্রথম স্তর, দ্বিতীয় স্তর, তৃতীয় স্তর এবং চতুর্থ স্তর। প্রথম স্তরে নবম থেকে দশম শ্রেণী শিক্ষাব্যবস্থাপনা চালু রয়েছে অর্থাৎ এটা মাধ্যমিক স্তর এর অন্তর্ভুক্ত। 

অন্যদিকে দ্বিতীয় স্তর মূলত উচ্চ মাধ্যমিক স্তর হিসেবে পরিগণিত যেখানে দুই বছর অধ্যায়ন করতে হয় একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণী তে এবং তৃতীয় স্তর হচ্ছে স্নাতক ডিগ্রি যেখানে আরো দুই বছর অধ্যায়ন করতে হয় অন্যদিকে চতুর্থ স্তর হচ্ছে মাস্টার্স ডিগ্রি, যেটাকে দাওরায়ে হাদিস বলা হয়। 

তৃতীয় পর্যায়: এ পর্যায়ে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক ডিপ্লোমা ও গবেষণামূলক শিক্ষা কোর্স। আপনি মূলত যে সকল বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারবেন তৃতীয় পর্যায়ে সেগুলো হচ্ছে:-

  • হাদীস, 
  • আরবিসাহিত্য, 
  • বাংলা সাহিত্য, 
  • ইংরেজি,
  • উর্দূ ও ফারসি ভাষা, 
  • ইসলামের ইতিহাস, 
  • সীরাত, 
  • ইলমুল কালাম,
  • ইসলামি দর্শন, 
  • তাফসির, 
  • ফিকহ, 
  • ফতওয়া, 
  • তাজবিদ, 
  • অর্থনীতি, 
  • রাষ্ট্রবিজ্ঞান, 
  • পৌর বিজ্ঞান 
  • সমাজ বিজ্ঞান সহ প্রভৃতি। 

পরিশেষে: তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা- বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচনা পর্বের আজ এখানেই ইতি টানছি। আমরা মূলত বেফাক কওমি মাদ্রাসার সর্ব বৃহত্তম বোর্ড সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আজকের প্রবন্ধে। তোর যদি আপনি আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি শেয়ার করুন। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *