দরখাস্ত লেখার নিয়ম

জেনে নিন– ৫ ধরনের দরখাস্ত লেখার নিয়ম

দরখাস্ত লেখার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আর সেই নিয়ম অনুসরণ করে যদি দরখাস্ত লেখা না হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সেটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা প্রাত্যহিক জীবনে আমাদের নানা কাজে দরখাস্তের প্রয়োজন পড়ে।

দরখাস্ত মূলত আবেদন পত্র। তবে সচরাচর এটাকে আমরা দরখাস্ত বলেই সম্বোধন করে থাকি। আজকের আলোচনার মাধ্যমে আমরা আবেদনপত্র বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম আপনাদেরকে জানাবো। আজকের এই প্রবন্ধে আপনারা মোট পাঁচ ধরনের দরখাস্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে আসুন শুরু করি।

দরখাস্ত লেখার নিয়ম

দরখাস্ত লেখার জন্য আপনাকে একটি সাধারণ নিয়ম মানতে হবে আর এটা কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করতে হবে। যথা:

প্রথমত: সবার উপরে অর্থাৎ শুরুতে তারিখ লিখতে হবে।

✓  দ্বিতীয়ত: প্রাপকের নাম পদবী এবং ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

তৃতীয়ত: দরখাস্তের বিষয়বস্তু লিখতে হবে।

চতুর্থত: বিষয়বস্তু লেখার পরবর্তীতে জনাব অথবা স্যার লিখতে হবে।

পঞ্চমত: উল্লেখ করতে হবে মূল বিষয়বস্তু। তবে সেটা সংক্ষিপ্ত আকারে এবং গঠনমূলকভাবে।

✓ষষ্ঠমত: সংক্ষিপ্ত বর্ণনা শেষে বিনীত অথবা ইতি কথা লিখতে হবে।

সপ্তমত: আবেদনকারীর নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

ব্যাস এই কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন হলে পরবর্তীতে লিখিত দরখাস্তটি একটি সুন্দর খামের মধ্যে রেখে প্রাপকের নিকট পাঠাতে হবে। মূলত এই কয়েকটি নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনি দরখাস্ত লেখেন তাহলে সেটা সঠিক এবং প্রফেশনাল আবেদনপত্র হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে গ্রাহকের কাছে।

দরখাস্ত লেখার নিয়ম ছবি

দরখাস্ত লেখার নিয়ম ছবি

বাংলা দরখাস্ত লেখার নিয়ম

দরখাস্ত বাংলা হোক অথবা ইংরেজি, আপনি মূলত এই একই নিয়ম অনুসরণ করে লিখতে পারবেন। যেকোনো দরখাস্ত লেখার জন্য আপনাকে এই একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। পরবর্তীতে আমরা যে সকল দরখাস্ত গুলো আপনাদেরকে সম্পূর্ণ লেখা দেখিয়ে দেবো সেগুলো হলো–

  • চাকরির দরখাস্ত
  • কোম্পানি চাকরি ছাড়ার দরখাস্ত
  • চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দরখাস্ত
  • ছুটির দরখাস্ত এবং
  • স্কুলে অনুপস্থিতির জন্য দরখাস্ত

তাই আপনারা যারা সকল ধরনের বাংলা দরখাস্ত লেখার সঠিক নিয়ম ও নমুনা জানতে চান তারা পরবর্তী স্টেপগুলো ভালোভাবে পড়ুন। 

দরখাস্ত আবেদন পত্র নমুনা

নমুনা–১ 

তারিখ ;  ২৭ / ০৩/  ২০২৩

বরাবর

অধ্যক্ষ

আদিতমারি সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ

আদিতমারি, লালমুনিরহাট। 

বিষয়ঃ  স্কুলে ভর্তি জন্য আবেদন পত্র

জনাব ,

 সবিনয় বিনেদন এই যে , আমি আদিতমারি সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর একজন নিয়মিত  ছাত্রী  আমার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী  আমার বাবা কর্মস্থল  বগুড়া থেকে  ঢাকা বদলি হয়েছে  আমি আমার পরিবারের সঙ্গে থাকি  আমার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে ঢাকা কোন বিদ্যালয় ভর্তি হওয়া প্রয়োজন

 অতএব  জনাবের নিকট আকুল আবেদন এই যে ,  আমার উক্ত অবস্থার কথা বিবেচনা  করে আমাকে আপনার বিদ্যালয় ভর্তির অনুমতি দিয়ে কৃতজ্ঞতা বাধিত করুন

 বিনীত নিবেদক ,

 আপনার একান্ত বাধ্যগত  ছাত্রী

মোছাম্মদ ; রফিকুল  ইসলাম

আদিতমারি সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ

শ্রেণী ;  দশম

রোল নং;  ১

শাখা ;  ক 

নমুনা–২

তারিখঃ ২৭-০৩-২০২৩

বরাবর

ব্যবস্থাপক

ডাচ বাংলা ব্যাংক লিঃ

পূর্ব জিন্দাবাজার শাখা, সিলেট।

বিষয়ঃ অনুপস্থিতির জন্য ছুটির আবেদন।

জনাব,

সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আপনার অধিনস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংক লিঃ, পূর্ব জিন্দাবাজার শাখা, সিলেট এর একজন সিনিয়র অফিসার। আমার শারিরীক অসুস্থতার কারনে গত ০১/০১/২০২১ খ্রিঃ হতে ০৫/০১/২০২১ খ্রিঃ তারিখ পর্যন্ত মোট ০৫ (পাঁচ) দিন অফিসে উপস্থিত হতে পারিনি। 

অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমার অসুস্থতার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করে অনুপস্থিতি কালের ৫ (পাঁচ) দিন ছুটি মঞ্জুর করতে আপনার সদয় মর্জি হয়।

বিনীত

আপনার একান্ত বাধ্যগত

(মোঃ রশিদ)

সিনিয়র এক্সিকিউটিভ  অফিসার

ডাচ বাংলা ব্যাংক লিঃ

পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট।

নমুনা-৩

তারিখঃ ২৭-০৩-২০২৩
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
আদর্শ উচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০০

বিষয়ঃ অসুস্থতার জন্য ছুটির আবেদন।
জনাব
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি সজিব হোসেন আপনার বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর  একজন নিয়মিত ছাত্র। গত ২৫/০৩/২০২৩ ইং বৃহস্পতিবার থেকে ২৬/০৩/২০২৩ ইং রোজ রবিবার পর্যন্ত আমার প্রচণ্ড জ্বর- ঠান্ডা থাকার কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারি নি। 

অতএব, মহোদয়ের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে, উপরোক্ত বিষয়টি বিবেচনা করে আমাকে ৪ দিনের ছুটি দিয়ে বাধিত করবেন।

বিনীত
আপনার নিয়মিত ছাত্র
সজিব হোসেন
শ্রেণীঃ ৯ম
রোল- ০২ 

নমুনা-৪ 

তারিখঃ ২৩-০৩-২০২৩ ইং
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
আদর্শ উচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০০

বিষয়ঃ জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন।


জনাব
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি সজিব হোসেন আপনার বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর  একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার বাবা’র অসুস্থতা ও পারিবারিক আর্থিক অনটনের কারনে নির্ধারিত সময়ে কলেজের সকল ফী ও বেতন পরিশোধ করতে পারিনি। উল্লেখ্য যে, আমার বাবা আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি এবং বাবার আয়ের উপর আমাদের পরিবারের সকল ভরণপোষণ ব্যয় বহন করা হয়।

অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমার বাবা’র অসুস্থতা ও পরিবারের আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে জরিমানা ছাড়া সকল ফী ও বেতন প্রদানের অনুমতি দানে আপনার সদয় মর্জি কামনা করছি।

বিনীত
আপনার নিয়মিত ছাত্র
সজিব হোসেন
শ্রেণীঃ ৮ম
রোল- ০৩

নমুনা-৫

তারিখ :২৭-০৩-২০২৩

বরাবর

প্রধান শিক্ষক

কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

সদর, কক্সবাজার।

বিষয়: ছাত্রাবাসে আসনের জন্য আবেদন।

জনাব,

সবিনয় নিবেদন এই যে,আমি আপনার বিদ্যলয়ের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের একজন নিয়মিত ছাত্র হই। আমার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী, যার কারণে কিছুদিন আগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়।ফলে আমার পুরো পরিবারকে সেখানে চলে যেতে হচ্ছে।তাছাড়া বিদ্যায়ের কাছাকাছি আমার এমন কোনো আত্মীয়ও নেই যার বাসায় থেকে আমি আপনার বিদ্যালয়ে আমার পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারি।এমতাবস্থায় বিদ্যলয়ের ছাত্রাবাসের একটি আসন আমার খুবই প্রয়োজন।

অতএব বিনীত প্রার্থনা যে,আমার অবস্থার কথা বিবেচনা করে বিদ্যাল্যের ছাত্রাবাসে আমাকে একটি আসন প্রদান করে আপনার বিদ্যালয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে আমি আপনার নিকট চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

নিবেদক

আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র-

করিম রহমান

শ্রেণি -নবম,রোল-০১,বিভাগ -বিজ্ঞান

কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় 

চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ও নমুনা

চাকরির দরখাস্ত লেখার সময় অবশ্যই অধিক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা চাকরির বাজারে টিকে থাকতে চাইলে এবং প্রতিযোগীদের মধ্যে সিলেক্ট হতে চাইলে অবশ্যই আপনার স্মার্ট হতে হবে এবং আপনার প্রত্যেকটি কাজকর্মে তা প্রকাশ পেতে হবে। 

চাকরির জয়েন পর্যন্ত পৌঁছানোর সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে দরখাস্ত বা আবেদন পত্র। আর তার পরবর্তীতে ভাইবা পরীক্ষা, এরপর আনুষঙ্গিক কিছু ধাপ পেরিয়ে চাকরি। এজন্য আমরা নমুনা হিসেবে আপনাদেরকে সরকারি শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন করার নিয়ম তুলে ধরছি। যথা—

তারিখঃ ২৭-৩-২০২৩ ইং
বরাবর
সভাপতি
আদর্শ উচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০০

বিষয়ঃ সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন।


জনাব
বিনীত নিবেদন এই যে, গত ০১/০১/২০২১ খ্রিঃ তারিখে দৈনিক “ঢাকা এর ডাক” পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, সহকারী শিক্ষক পদে আপনার বিদ্যালয়ে ৫ জন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। আমি উক্ত পদের একজন প্রার্থী হিসেবে আমার শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ যাবতীয় আনুষাঙ্গিক তথ্যাদি মহোদয়ের নিকট তুলে ধরলাম।

১। নামঃ
২। পিতার নামঃ
৩। মাতার নামঃ
৪। বর্তমান ঠিকানাঃ
৫। স্থায়ী ঠিকানাঃ
৬। জন্ম তারিখঃ
৭। জাতীয়তাঃ
৮। ধর্ম:
৯। শিক্ষাগত যোগ্যতা :

পরীক্ষার নামবোর্ডপাশের সনপ্রাপ্ত গ্রেড
এসএসসিঢাকা         ২০১৪ জিপিএ-৫
এইচএসসিঢাকা             ২০১৬জিপিএ-৫
বিএসসিঢাকা               ২০২০প্রথম শ্রেণী
এমএসসিঢাকা             ২০২২প্রথম শ্রেণী

১০। অভিজ্ঞতাঃ ?

অতএব, মহোদয়ের নিকট বিনীত আবেদন এই যে, আমকে আপনার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।

বিনীত
আপনার একান্ত বাধ্যগত
নিরব হোসেন
মোবাইলঃ  ০১৭৪৫০১২২৩২

সংযুক্তিঃ

১। পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি ২ কপি।
২। একডেমিক সকল সনদপত্রের সত্যায়িত কপি।
৩। চারিত্রিক সনদপত্র।
৪। নাগরিকত্ব সনদপত্র।
৫। ৫০০ টাকার পোস্টাল অর্ডার।

তবে হ্যাঁ, পাঠক বন্ধুরা আপনি মূলত চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে চাইলে বা চাকরির দরখাস্ত লেখার আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পড়তে পারেন আমাদের লিখিত আরেকটি পোস্ট— ক্লিক করুন এখানে 

কোম্পানির চাকরি ছাড়ার দরখাস্ত

কোন একটি কোম্পানিতে চাকরি করা অবস্থায় আপনি যদি অন্য কোন কারণে সেটা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবেন তাহলেও চাকরি ছাড়ার দরখাস্ত লিখতে হবে। কেননা চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার দরখাস্ত পেশ করার মাধ্যমে আপনি সেই কোম্পানি থেকে ছাড়পত্র পাবেন। 

তাই এ পর্যায়ে আমরা পদত্যাগ পত্র বা রেজিগনেশন লেটার লেখার সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও নমুনা তুলে ধরব। তাহলে আসুন জেনে নেই–  চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন পত্র বা দরখাস্ত। 

তারিখ: ২৭-০৩-২০২৩

বরাবর

ম্যানেজার

অপপো মোবাইল কোম্পানি লি:

 ঢাকা-বাংলাদেশ

বিষয়: চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য আবেদন।

জনাব

সবিনয় নিবেদন এই যে আমি আপনার কোম্পানির একজন নিয়মিত কর্মচারী, গত পাঁচ বছর যাবত আপনার কোম্পানিতে চাকরি করছি একজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে। বর্তমানে আমি ব্যক্তিগত কারণে নিজের ইচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে চাচ্ছি।

অতএব মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন আমাকে ৩০-০৩-২০২৩ তারিখের মধ্যে অব্যাহতি পত্র গ্রহণ করে আমাকে অন্যত্র ফিরে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করবেন।

নিবেদক

নাম: রোকেয়া খাতুন

পরিচয়: আপনার কোম্পানির একজন কর্মচারী

ঠিকানা: রাজশাহী

মোবাইল নাম্বার: ০১৭০০৬২৪৯৭৪

চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দরখাস্ত

কোম্পানি চাকরি ছাড়ার জন্য দরখাস্ত হিসেবে আমরা আপনাদেরকে ইতিমধ্যে যে নমুনাটি জানিয়েছি মূলত চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দরখাস্ত লেখার নিয়ম একই। 

মনে করুন আপনি আপনার ব্যক্তিগত কিছু কারণ এবং অন্যত্র কোথাও ভালো পদে চাকরি হয়েছে বলে বর্তমানে যে চাকরিতে রয়েছেন তার ছেড়ে দিতে ইচ্ছুক। আর তাই কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কাছে আপনার একটি অব্যাহতি পত্র লিখতে হবে। এক্ষেত্রে মূলত আপনি যে নিয়মটি অনুসরণ করবেন। 

তারিখ: আপনি যে তারিখে দরখাস্তটি লিখছেন

বরাবর: প্রাপকের নাম ও ঠিকানা

বিষয়: ব্যক্তিগত কারণে চাকরি হতে অব্যাহতির জন্য আবেদন।

জনাব,

যথাবিহিত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে আমি রুকাইয়া ইসলাম আপনার কোম্পানিতে দীর্ঘ সাত বছর যাবত সিনিয়র স্টাফ হিসেবে কর্মরত রয়েছে। বর্তমানে আমার পারিবারিক সমস্যার জন্য আগামী ৩০ তারিখের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়া প্রয়োজন।

অতএব মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন আমাকে উক্ত চাকরি হতে অব্যাহতি প্রদান করে বাধিত করবেন।

নিবেদক

রুকাইয়া ইসলাম

সিনিয়র স্টাফ

“আপনি যে কোম্পানিতে কাজ করবেন সেই কোম্পানির নাম”

ছুটির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ও নমুনা

মনে করুন আপনার ব্যক্তিগত কারণে পাঠ্য বিদ্যালয় থেকে ছুটি নেওয়া অত্যন্ত জরুরী, আর তাই উক্ত বিষয়ের উপর একটি দরখাস্ত লিখতে হবে। সে ক্ষেত্রে মূলত আপনি দরখাস্ত লেখার নিয়ম অনুযায়ী আপনার স্কুলের information এবং আপনার মতামত উক্ত দরখাস্তের মধ্যে খুব সুন্দরভাবে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন। 

ভালো ভাবে বোঝার সুবিধার্থে আমরা এ পর্যায়ে নমুনা হিসেবে দুইটি দরখাস্ত তুলে ধরছি। একটি হচ্ছে অগ্রিম ছুটির জন্য আবেদন অপরটি হচ্ছে এই মুহূর্তে ছুটির জন্য আবেদন। 

অগ্রিম ছুটির জন্য আবেদন পত্র লেখার নিয়ম ও নমুনা

তারিখ: ২৭-৩-২০২৩

বরাবর

প্রধান শিক্ষক

নলবাতা উচ্চ বিদ্যালয়

সিংড়া নাটোর

বিষয়: অগ্রিম ছুটির জন্য আবেদন।

জনাব,

সুবিনয় নিবেদন এই যে আমি আপনার বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর একজন নিয়মিত ছাত্রী। আগামী পহেলা এপ্রিল আমার বড় বোনের বিয়ে। তাই এক থেকে পাঁচ তারিখ পর্যন্ত আমি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারবো না। মূলত আমি আপনার কাছে আমার অগ্রিম ছুটির প্রত্যাশা কামনা করছি।

অতএব মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন আমাকে উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আগামী পাঁচ দিন অগ্রিম ছুটি প্রদান করে বাধিত করবেন। 

নিবেদিকা

শশীকা রানী

শ্রেণী: অষ্টম

রোল:১

বিদ্যালয়ে উপস্থিতকালীন ছুটির জন্য দরখাস্ত লেখার নিয়ম ও নমুনা

মনে করুন আপনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত রয়েছেন। এ পর্যায়ে বাসা থেকে আপনাকে ব্যক্তিগত কিছু কারণে ফিরে আসার খবর পাঠিয়েছে। এ পর্যায়ে আপনি প্রধান শিক্ষকের নিকট যেভাবে আপনার দরখাস্ত উপস্থাপন করবেন সেটা হলো—

তারিখ: ২৭-৩-২০২৩

বরাবর

প্রধান শিক্ষক

হাতিয়ান্দহ উচ্চ বিদ্যালয়

সিংড়া নাটোর

বিষয়: ছুটির জন্য আবেদন।

জনাব,

সবিনয় নিবেদন এই যে আমি আপনার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর একজন নিয়মিত ছাত্রী। স্কুলে থাকাকালীন অবস্থায় আমাকে খবর পাঠানো হয়েছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার। 

অতএব মহোদয়ের কাছে আমার আবেদন, আমার এই আবেদন পত্রটি বিবেচনায় রেখে এই মুহূর্তে ছুটি প্রদান করতে বাধিত থাকবেন।

নিবেদিকা

আপনার অনুগত ছাত্রী

সুবর্ণা রানী

শ্রেণী: ৯ম

রোল-২

স্কুলে অনুপস্থিতির জন্য দরখাস্ত

বিদ্যালয়ে যদি আপনি অনুপস্থিত থাকেন তাহলে এ পর্যায়ে আপনাকে যেভাবে দরখাস্ত বা আবেদন পত্র উপস্থাপন করতে হবে তা নিম্নরূপ:-

তারিখ: ২৭-৩-২০২৩

বরাবর

প্রধান শিক্ষক

হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়

সিংড়া নাটোর

বিষয়: অনুপস্থিতির জন্য ছুটির আবেদন।

জনাব,

সবিনয় নিবেদন এই যে আমি আপনার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া রত একজন ছাত্রী, আমার নাম সেতু রানী আমি গত দুইদিন অর্থাৎ ২৫, ২৬ তারিখে শারীরিক অসুস্থতা এবং ব্যক্তিগত কিছু কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে পারিনি।

অতএব

মহোদয়ের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে আমার উক্ত অসুস্থতার কথা মানবিক বিবেচনা করে আমাকে গত দুই দিনের ছুটি দানে জনাবের নিকট মর্জি প্রার্থনা করছি।

বিনীত নিবেদিতা

আপনার একান্ত বাধ্যগত ছাত্রী

সেতু রানী

দশম শ্রেণী

বিভাগ:সায়েন্স

রোল নং: ১

দরখাস্ত লেখার ক্ষেত্রে সতর্কতা

আমরা অনেকেই রয়েছি যারা দরখাস্ত লেখার ক্ষেত্রে মূলত বেশ কিছু ভুল করে থাকি। যেমন:

  • অতিরিক্ত পেচিয়ে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করি
  • প্রয়োজনের থেকে অপ্রয়োজনীয় কথা বেশি লিখি
  • কখনো কখনো এক থেকে দুই পেজে চলে যাই
  • বানান ভুল করি এবং ভাষার মাধুর্যতা হারাই।

তাই সব সময় যেকোনো দরখাস্ত লেখার ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই সতর্ক থাকবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন সেগুলো হচ্ছে::

  • একটি দরখাস্ত শুধুমাত্র একটি পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে
  • বানান নির্ভুল হওয়ার দিকে সতর্ক হতে হবে
  • গুরুচণ্ডালী করা যাবেনা ভাষা হতে হবে শুদ্ধ এবং সাবলীল
  • মার্জিত কালার অর্থাৎ কালো কালারের কলম দিয়ে লিখতে হবে, কেননা আমাদের মাঝে কেউ কেউ রয়েছেন যারা বিভিন্ন রঙিন কলম দিয়েও দরখাস্ত লেখার চিন্তা করে থাকেন যেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।

পরিশেষে: যেহেতু দরখাস্ত আমাদের প্রাথমিক জীবনে প্রয়োজনীয় একটি বিষয় তাই এটা সম্পর্কে ধারণা রাখা আমাদের প্রত্যেকেরই জরুরী। আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল পড়ার পর আপনি শুদ্ধ ও সুন্দরভাবে যেকোনো ধরনের দরখাস্ত উপস্থাপন করতে সক্ষম হবেন।

তো পাঠক বন্ধুরা পাঁচ ধরনের দরখাস্ত লেখার নিয়ম এবং দরখাস্ত লেখার সতর্ক ও আরো বিস্তারিত বিষয়বস্তু চেনে আপনাদের কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *